দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী জীবনে রাসূল (স:) এর সাহাবীগণ কত সাধারণ ভাবেই না জীবনযাপন করেছেন। যত কিছুই হোক না কেন সাহাবীগণ কখনো আল্লাহ প্রদত্ত এবং রাসূল (স:) প্রদর্শিত ইসলাম থেকে বিচ্যুত হন নি। কারণ তারা জানতেন পরকালে শান্তিময় জীবন পেতে হলে দুনিয়ার ভোগ-বিলাসময় জীবনের কিছুই কাজে আসবে না।
আর তাইতো সাহাবীদের দুনিয়া নিয়ে অন্তর্দৃষ্টি কেমন ছিল এবং কিভাবে অতিবাহিত করেছেন সেই আলোকে লেখা একটি অন্যতম বই হলো “সাহাবীদের অন্তর্দৃষ্টি” । বইটির মূল লেখক বর্তমান আরব বিশ্বের সুপরিচিত নাম শায়েখ সালেহ আহমেদ আশ-শামী হাফিযাহুল্লাহ। অনুবাদ করেছেন মাওলানা রহমতুল্লাহ।
.
➤ সার-সংক্ষেপঃ-
বইতে ভূমিকা ও অনুবাদকের কথা ব্যতীত মোট ৫৮টি শিরোনামের মাধ্যমে সাহাবীদের দুনিয়া সম্পর্কে অন্তর্দৃষ্টিগুলো আলোচনা করা হয়েছে। রাসূল (স:) এর সাহাবীগণ জ্ঞানের দিক থেকে যেমন ছিলেন সুগভীর তেমনি তাদের আচার আচরণ ছিল অকৃত্রিম। দুনিয়ার জীবনের ক্ষনিকের মোহ তাদের স্পর্শ করতো না। এর অন্যতম কারণ হলো তারা স্বয়ং রাসূল (স:) এর সান্নিধ্য লাভ করেছিলেন এবং সেই সাথে তাদের ছিল বিচক্ষণতা, উন্নত দৃষ্টিভঙ্গি ও সুগভীর অন্তর্দৃষ্টি। সহমর্মিতা ও সহানূভূতির ক্ষেত্রে তাদের অংশগ্রহণ ছিল অনন্য। চিন্তার পরিশুদ্ধি ও আমলের বিশুদ্ধতায় তারা ছিলেন তুলনাহীন। সাহাবায়ে কেরামের মাঝে এমন অনেকেই আছেন যাদের জীবনে ভোগ-বিলাসের অবারিত সুযোগ ও অর্থ সম্পদ থাকা সত্ত্বেও তারা সবকিছু দান করে অভাব অনটন গ্রহন করে দারিদ্র্যকে আলিঙ্গন জানিয়েছেন। যাতে অঢেল সম্পত্তির কারণে আল্লাহর ইবাদতে বিঘ্ন না ঘটে।
এভাবে পুরো বইতে সাহাবায়ে কেরামের চিন্তা ও কর্মের অনেক নমুনা উল্লেখিত রয়েছে।
.
➤ বইটি কেন পড়বেনঃ-
সাহাবীগণ কিভাবে দুনিয়ার প্রতি অনাসক্ত ছিলেন এবং তাদের কি এমন অন্তর্দৃষ্টি সম্পন্ন চিন্তা ছিল যার তারা সর্বক্ষেত্রেই উচ্চ মর্যাদার অধিকারি হয়েছিলেন তা জানতে হলে বইটি অবশ্যই পড়ুন। বইটি হতে পারে সাহাবায়ে কেরামগণের আদর্শ জীবনে বাস্তবায়ন করার এক অনন্য মাধ্যম।
.
➤ ব্যক্তিগত অনূভুতিঃ-
বইটি পড়ে সাহাবীদের কর্মময় জীবনের অন্তর্দৃষ্টি সম্পর্কে অনেক কিছু জেনেছি। যা থেকে আমাদের সকলের জন্য রয়েছে শিক্ষণীয় উপাদান। কেননা সাহাবীগণ ছিলেন রাসূল (স:) এর সহচর্চ প্রাপ্ত ও উম্মাহর শ্রেষ্ঠ প্রজন্ম এবং তাদের মধ্যে অনেকে দুনিয়াতেই জান্নাতের সুসংবাদ লাভ করেছেন।
সব মিলিয়ে বইটি খুবই ভালো এবং উপকারী। তাই সকল পাঠকের প্রতি অনুরোধ বইটি একবার হলেও পড়ুন আর জীবনকে রাঙিয়ে তুলুন সাহাবায়ে কেরামের জীবন ও অন্তর্দৃষ্টির আলোকে।