

সাহাবিদের চোখে দুনিয়া (হার্ডকভার)
প্রথম তিন প্রজন্ম (সালফে সালেহীনগণ) দুনিয়াকে যেভাবে দেখেছেন, সেটাই ছিল সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি। একজন মুসলিম যতক্ষণ পর্যন্ত তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গি বিবেচনায় রেখে এই দুনিয়াকে দেখবে, ততক্ষণ যে নিরাপদ থাকবে। কিন্তু যখন তার দৃষ্টি পাশ্চাত্যের দিকে, অবিশ্বাসীদের দিকে কিংবা নিজ প্রবৃত্তির দিকে ঝুঁকে যাবে, তখন সে বিপদের সম্মুখীন হবে। তার দুনিয়াও বরবাদ হবে, আর আখিরাতেও সে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই দুনিয়ার ব্যাপারে সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি কোনটা, সে বিষয়ে জ্ঞান রাখাটা জরুরি। ইমাম আহমাদ বিন হাম্বাল তাঁর “কিতাবুয যুহ্দ” গ্রন্থে দুনিয়ার ব্যাপারে সালফে সালেহীনদের দৃষ্টিভঙ্গি কী ছিল, তা নিয়ে আলোচনা করেছেন। নিঃসন্দেহে কিতাবটি মুসলিম উম্মাহর অমূল্য সম্পদ। কিন্তু দুঃখজন হলেও সত্যি, কিতাবটির বাংলা কিংবা ইংরেজি অনুবাদ এত বছরেও প্রকাশিত হয়নি। দুনিয়ার ব্যাপারে ইসলামের সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি কী হওয়া দরকার, সে বিষয়টা মাথায় রেখেই “মাকতাবাতুল বায়ান” বইটি বাংলায় অনুবাদ করার সিদ্ধান্ত নেয়। আলহামদুলিল্লাহ, ইতোমধ্যেই বইটির দু-খণ্ড “রাসূলের চোখে দুনিয়া” ও “সাহাবিদের চোখে দুনিয়া” নামে প্রকাশিত হয়েছে।সেই ধারাবাহিকতায় কিতাবটির শেষ খণ্ড ‘তাবিয়িদের চোখে দুনিয়া।’
'সাহাবিদের চোখে দুনিয়া' বইটা ইতিপূর্বে সম্পাদনার ভেতর দিয়ে পুরোটা একবার পড়া হয়েছিলো আমার। কিন্তু আরবীর সাথে মিলিয়ে মিলিয়ে সম্পাদনা করার ফলে যে একটা বাড়তি চাপ ছিলো তার কারণে বইয়ের বক্তব্যগুলোর তাৎপর্য অতোটা খেয়াল করা হয় নি তখন। এখন সম্পাদকের দৃষ্টিতে না পড়ে একজন সাধারণ পাঠকের দৃষ্টিতে বইটা পড়তে গিয়ে আপ্লুত হচ্ছি। সবচে বড়ো ব্যাপার হচ্ছে, সালাফদের বইগুলোর ভেতরে আলাদা একটা প্রশান্তি অনুভব করা যায়। একটা নূরনূরভাব অনূভূত হয় হৃদয়ে। যা আসলে বর্ণমালা দিয়ে প্রকাশ করা যায় না। কেবল অনুভবই করা যায়। প্রতিজন সাহাবির জীবনই আমাদের জন্য উন্নত আদর্শ বয়ে বেড়াচ্ছে। প্রয়োজন শুধু সেগুলোকে গ্রহণ করে নেওয়া।
ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বল (রাহিমাহুল্লাহ) যার নাম শোনেননি এমন মুসলিম খুঁজে পাওয়া মুশকিল। ১৬৪ হিজরি /৭৮০ খৃষ্টাব্দে বাগদাদে জন্মগ্রহণ করেন। বাগদাদে তিনি আইন,হাদীস ও অভিধান শাস্ত্র নিয়ে পড়াশোনা করেন। তিনি ইমাম আবু হানিফা ও ইমাম শাফিয়ি (রহিমাহুল্লাহ) এর ছাত্র ছিলেন। জ্ঞান ব্যতীত পার্থিব কোনো বিষয়ে তার কোনো আগ্রহ ছিলো না। ইমাম আবু দাঊদ সিজিস্তানি (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, "আমি দু-শতাধিক বিজ্ঞ মানুষের সাথে সাক্ষাৎ করেছি; তবে আহমাদ ইবনু হাম্বল এর ন্যায় কাউকে দেখিনি। মানুষ সাধারণত পার্থিব যেসব বিষয় নিয়ে আলোচনায় প্রবৃত্ত হয়, তিনি সেসব বিষয়ের আলোচনায় যো"বুক রিভিউ" সকল প্রশংসা একমাত্র আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার,সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক রহমাতুল্লিল আলামিন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম এর প্রতি। দুনিয়া এক আশ্চর্যের জায়গা! আমরা এক রহস্যের জগতে বাস করি। দুনিয়ার সাথে আমাদের সম্পর্ক কি? কি চাই আমরা দুনিয়ার থেকে? এখানে আমাদের করনীয় কী? অনেক প্রশ্ন,,,, এই দুনিয়া সম্পর্কে নবি-রাসূল, সাহাবি ও তাবেয়িদের দৃষ্টিভংগি কী _তা নিয়ে হিজরি দ্বিতীয় শতকের খ্যাতিমান হাদীসবিশারদ ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বল (রহিমাহুল্লাহ) একটি স্বতন্ত্র গ্রন্থ রচনা করেছেন। নাম "কিতাবুয যুহদ"। 'যুহদ' শব্দের আভিধানিক অর্থ 'দুনিয়া বিরাগ'। বইটি বর্তমানে তিনটা খন্ডে প্রাকিশিত হয়েছে। প্রথম "রাসূলের চোখে দুনিয়া", দ্বিতীয় " সাহাবিদের চোখে দুনিয়া" এবং তৃতীয় "তাবেয়ীদের চোখে দুনিয়া"। আমরা যারা দুনিয়ায় মোহের মাঝে বেচেঁ থেকে নিজেদের অস্তিত্ব হারাতে বসেছি, তাদের জন্য এই বইটা একটা রিমাইন্ডার। কেমন ছিলো রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালামের জিবন,কেমন ছিলো সাহাবা রাদিআল্লাহু আনহুদের জিবন আর কেমন আমাদের জিবন??? কি বিস্তর পার্থক্য!!!! নবিদের (আলাইহিস সালাম) দের জিবনের, সাহাবিদের জিবনের পরতে পরতে কিভাবে তারা দুনিয়ার ভোগ বিলাসিতা থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছেন তা এই বইটা না পড়লে এতো সুক্ষ ভাবে কখনোইরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, "এই দুনিয়ার সাথে আমার কী সম্পর্ক? এই দুনিয়ার সাথে আমার দৃষ্টান্ত হলো এমন এক অশ্বারোহীর ন্যায় যে গ্রীস্মের একদিন এক বৃক্ষ-ছায়ায় ঈষৎ নিদ্রা গেল,তারপর কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে সেখান থেকে চলে গেল।" এই হলো সেই দুনিয়া। ভাগাড়ে পড়ে থাকা মৃত ভেড়ার চেয়েও অধিক তুচ্ছ। যার জন্য আমরা এত কিছু করি। বাড়ি,গাড়ী, সোনা-গহনা কত কি! সম্পদের পাহাড় না থাকা মানে আপনি হেরে গেলেন। কি বিকৃত মানষিকতা। উসমান ইবনু আফফান (রদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, "রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, "মাথার উপর একটা ছাদ, মেরুদণ্ড সোজা রাখার জন্য যতটুকু খাদ্য আর সতর ঢাকার জন্য যতটা কাপড় প্রয়োজন তাছাড়া অন্য সব কিছুতে আদম সন্তানের কোনো অধিকার নেই।" এই হাদিসটা পড়ার পরে রীতিমতো ধাক্কা খেয়েছিলাম। আমরা কি কেবলমাত্র মেরুদণ্ড সোজা রাখার জন্য খাবার খাই? অবশ্যই না, আমাদের ভাব এমন যে খাওয়ার জন্যই বাচিঁ। আর আলমারির দিকে যখন তাকাই, ভাবি এত কাপড়ের হিসেব দেবো কি করে। ইয়া আল্লাহ! আপনি আমাদের হিসাবকে সহজ করে দিন। এই বইটা আমার পড়া বই গুলোর মধ্যে অন্যতম। এই বইটা পড়ার পরে আমি নিজের মাঝে যতটা পরিবর্তন খেয়াল করেছি অন্য কোনো বই পড়ে এমনটা অনুভব করিনি। আলহামদুলিল্লাহ। আশাকরি আপনারা ও বইটা পড়বেন। ডেইলি রিমাইন্ডার হিসাবে কাজ করবে, ইনশাআল্লাহ।
সাহাবায়ে কেরামের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো যত কিছু হোক না কেন সাহাবীগণ কখনো আল্লাহ প্রদত্ত এবং রাসূল (সঃ) প্রদর্শিত ইসলাম থেকে বিচ্যূত হননি। সাহাবীদের দুনিয়ার জীবন কেমন ছিল এবং কিভাবে অতিবাহিত করেছেন সে আলোকে লেখা একটি অন্যতম বই হলো কিতাবুয যুহাদ। যা আজ থেকে প্রায় সাড়ে এগারশো বছর পূবে ইমাম আহমদ হাম্বল রচিত এক মহা মূল্যবান গ্রন্থ। বইটি মূলত একটি হাদীসের বই। এখানে স্থান পেয়েছে বেশ কিছু সাহাবী (রাঃ) এর দুনিয়াবী কর্ম ও দৃষ্টিভঙ্গি সংক্রান্ত হাদীসগুলো। নবি-রাসূলগণ যেই দৃষ্টি নিয়ে দুনিয়াকে দেখতেন তা সবচেয়ে বেশি যারা মনে প্রাণে আত্নস্থ এবং উপলব্ধি করেছিলেন তারা হচ্ছেন সাহাবা রাদিআল্লাহু আনহুম আজমাইন। ১৪০০ বছর পরে আজকের এই যুগে আমরা যদি ইসলামকে উপলব্ধি করতে চাই তবে অবশ্যই জানতে হবে সাহাবীরা ঠিক কোন চোখে এই দুনিয়া কে দেখেছেন, কোন দৃষ্টিভঙ্গির কারণে দুনিয়া ও আখিরাতে সফলদের অন্তর্ভূক্ত হয়েছেন। সাহাবীদের চোখে দুনিয়া বইটি পড়লে বিখ্যাত সাহাবীদের জীবনের দৃষ্টিভঙ্গি যানার পাশাপাশি জানা যাবে, দুনিয়াকে কোন চোখ দিয়ে দেখলে আমরা দুনিয়া এবং আখিরাতে সফল হতে পারব।
SIMILAR BOOKS
