১ম ফ্ল্যাপ: ‘সাগর ডাকে আয়’ বইটি সম্পর্কে এটুকুই বলা যায়, এ বইয়ে সাগর ভ্রমণের অভিজ্ঞতার ফাঁক গলে বেরিয়ে এসেছে সংসার অভিজ্ঞ এক মাঝবয়সী নারীর মনের ভেতর জমে থাকা কত শত রকমের অনুভূতি। কোনটি আনন্দে মাখামাখি, কোনটি স্মৃতিকাতরতায় পূর্ণ, কোনটি বেদনাবিধূর, কোনটি অভিযোগ আর অনুযোগে ভরা। এ শুধু একজন নারীরই কথা নয়, সংসারে বোবা হয়ে থাকা অধিকাংশ নারীরই অন্তরের কথা। সমুদ্র ভ্রমণের শখ ছিল সেই তরুণী বয়সে, কী ভীষণ স্বপ্নে মাখামাখি শখ ছিল। তখন সময় ছিল অন্যরকম, তরুণী বয়সে সবকিছু হাতের মুঠোয় থাকে, চারদিকে শুধুই ভালোবাসার ছড়াছড়ি। সমুদ্র ভ্রমণ হলে হতেও পারতো, কিন্তু সংসারের বাস্তবতায় তা হয়ে উঠেনি। দেড় বছর পূর্বে মধ্যবয়সে পৌঁছে সমুদ্র ভ্রমণে গেলাম। দেখলাম সমুদ্র, বেড়ালাম সমুদ্র, তবে তারুণ্যের স্বপ্নভরা চোখে নয়, সংসার সমুদ্রে সাঁতার কাটা ডুবুরীর চোখে সমুদ্র দেখলাম। তারই আলোকে লেখা হয়েছে ‘সাগর ডাকে আয়’। কথাশিল্পী হুমায়ুন আহমেদ এক উপন্যাসে লিখেছিলেন, সমুদ্র এত বিশাল যে এই বিশালত্বের সামনে দাঁড়িয়ে মিথ্যে বলা যায়না। উনি সত্যিটা উপলব্ধি করেছিলেন। আমিও ‘সাগর ডাকে আয়’ বইটিতে মিথ্যে বলতে পারিনি কারণ সাগরকে সামনে রেখে মিথ্যে বলা যায়না। আমার এই লেখায় কাউকে ছোট করতে চাইনি, কাউকে বড় করতে চাইনি, নিজেকেও না। সাগরের সামনে দাঁড়িয়ে মনে যা এসেছে, তাই লিখেছি। সাগর ডাকে আয় বইটি পড়ে কেউ যদি আহত বোধ করেন, তার কাছে করজোড়ে ক্ষমা চাইছি। সাগরের সামনে দাঁড়িয়ে আমি মিথ্যে বলতে পারিনি, আপনিও মিথ্যে বলতে পারবেন না।