ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ রূপকথার গল্পের কোনে বিকল্প নেই। হওয়া সম্ভবও নয় বোধ করি। দেশে দেশে, কালে কালে এই গল্প আদৃত হয়ে আসছে। এই পরম্পরায় কোনো ছেদ নেই। জমজমাট কাহিনী, নাটকীয়তা, রহস্য, টান টান উত্তেজনার অজস্র উপাদান ছড়িয়ে থাকে এসব গল্পে। ছোটরাই শুধু নয়, বড়রাও আনন্দে আপ্লুত হন। রাজ-রাজড়া, ব্যঙ্গমা-ব্যঙ্গমী, পঙ্খীরাজ, পশু-পাখি, কতো যে অদ্ভুত অদ্ভুত চরিত্র, তার কোনে হিসাব কিতাব নেই। জীবজন্তুরাও কথা বলে মানুষের ভাষায় । তাদের মধ্যেও মানবিক আনন্দ বিষাদ, দোষ-গুণের উপস্থিতি আমরা লক্ষ্য করি অবাক বিস্ময়ে। রকমারি রূপকথার বিচিত্র সম্ভার নানা কারণেই পাঠক মন তৃপ্ত করে। গল্পের বুনট, রহস্যময়তা, কী ঘটতে চলেছে তা জানবার অপার কৌতূহল চুম্বকের মতো টেনে নিয়ে যোয় গল্পের গভীরে, পরিণতির চূড়ায়।
এই গ্রন্থে রয়েছে কবি সাংবাদিক হাসান হাফিজ রূপান্তরিত রূপকথাসমূহ। বিভিন্ন দেশের আচার-সংস্কৃতি, লোক ঐতিহ্য, মানবিক বৈশিষ্ট্য প্রতিফলিত হয়েছে এসব গল্পে। লোক কবি বলেছিলেন দারুণ এক কথা-‘নানান বরণ গাভী রে ভাই একই বরণ দুধ/ জগত ভরমিয়া দেখলাম একই মায়ের পুত’। মানুষে মানুষে পার্থক্য থাকলেও ভেতরে ভেতরে তাদের অনুভূতি প্রায় একই রকম। সেই ঐক্যেরই দেখা মেলে এসব গল্পে। গড়ে আপ্লুতি হওয়ার পাশাপাশি পুলকিত হয়ে সেই সামঞ্জস্যও আবিষ্কার করা সম্ভব নয়। ভালো লাগার এক আনন্দময় শিহরণে পাঠকরা আলোড়িত ও মুগ্ধ হন, এই মধুর অভিজ্ঞতার কোনো তুলনা নেই।
হাসান হাফিজ
জন্ম ১৫ অক্টোবর ১৯৫৫। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে। পড়ালেখা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে, বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে। পেশা সাংবাদিকতা। পেয়েছেন শ্রীজ্ঞান অতীশ দীপঙ্কর স্বর্ণপদক, ডাকসু সাহিত্য পুরস্কার, অগ্রণী ব্যাংক শিশুসাহিত্য পুরস্কারসহ বেশ কিছু পুরস্কার। তিনি জাতীয় প্রেসক্লাবের সহসভাপতি, বাংলাদেশ পরিবেশ সাংবাদিক ফোরামের (এফইজেবি) সাধারণ সম্পাদক ও বাংলা একাডেমির জীবনসদস্য। এ পর্যন্ত প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা ১৪০।