ভূমিকা রক্ত নদী পেরিয়ে ইংরেজ শ্বেতাঙ্গদের ইসলাম বৈরিতা, বেনিয়াদের চাণক্য কূটকৌশল ও ফিরিঙ্গিদের প্রতারণার কাহিনী। হিন্দুরা শতাব্দীকাল ধরে উপমহাদেশীয় মুসলিম জাতির রক্তপানের আশায় মুখ ‘হা’ করেছিলভ। শ্বেতাঙ্গ ফিরিঙ্গিরা উপমহাদেশ থেকে লেজ গুটিয়ে পালানোর কালে তাদের শয়তানী দাবার দুই ঘোড়া লর্ড লুই মাউন্টব্যাটেন ও র্যাডক্লিফের হাতে এর ভাগ্য সোর্পদ করে যায়। সুতরাং বিশ্ব ইতিহাসের কুলাঙ্গার এ ব্যক্তিদ্বয় কলমের প্রথম খোঁচায় গুরুদাসপুর জেলাকে পাকিনস্তানমুক্ত করে ভারত মাতার ঝুলিতে পুরে দেয়। বন্ধ করে দয়ে ওই সব ভাগ্য বিড়ম্বিত মুহাজিরের আশা-ভরসার শেষস্থল-যারা মুসিবতের কালে ওই জেলায় আশ্রয়ের আশা পুষে আসছিল মনে। এই নয়া ফায়ছালার পূর্বে গুরুদাস পুর পাকিস্তানের অঙ্গ ছিল। হুশিয়ারপুর ও গুরুদাস পুরের মাঝ দিয়ে বয়ে চলত বিয়াস নামের শান্তশিষ্ট নদীটি। বিয়াস বিধৌত অঞ্চলের মুসলিম সন্তানরা মনে করতেন, যে কোন সময় পাড়ি দিয়ে তারা পাকিস্তান উপনীত হবেন। স্মর্তব্য যে, ওপারেই সাধের জেলা গুরুদাসপুর। কিন্তু ইংরেজ ও হিন্দুদের দ্বৈত ষড়যন্ত কেবল গুরুদাসপুরের মত নয়নাভিরাম ভূখণ্ডকেই কংগ্রেসের কাছে সোপর্দ করল না, বরং কংগ্রোর ঢেউ খেলানো পর্বতমালার পাহাড়ী মুসলমানদের রক্তের হোলিখেলারও ব্যবস্থা করল। এমনিভাবে জন্মুও হিন্দুদের খাই খাই উদরে ঢোকানো হলো। কল্পনার রঙিন পাখায় ভর করে আমরা আজ ওই কাফেলার স্মৃতি রোমন্থন করতে পারি-যাদের মিছিলে আবাল-বৃদ্ধ বনিতা ছিল। অজানার উদ্দেশ্যে একটু মাথঅ গোঁজার ঠাঁইয়ের জন্য ওদের যাত্রাপথে শিখ সন্ত্রাসী আর আধিপত্যবাদী দাদারা ওৎ পেতে ছিল। বিংশ শতাব্দীর দ্বারপ্রান্তের মানুষ আজ ওই কাফেলার সহযাত্রীদের কাহিনী জানে না, যারা ভারতের নানান শহর-বন্দরে শাহাদত বরণ করেন। জঙ্গল, গিরিপথেই ওরা হারিয়ে গেছে। হারিয়ে গেছে এমন এক জগতে যেখান থেকে ফিরে আসবে না কোনদিনও। ইতিহাস ওদের ফিরিস্তি তুলে ধরতে অপারগ। বিশেষ করে হিন্দু-ইংরেজদের ইতিহাসে ওদের ঠাঁই নেই।