বর্তমান বিশৃঙ্খল সমাজের চেয়ে অধিকতর সুশৃঙ্খল সমাজ বিনির্মাণের ধারণা নতুন নয়, বরং তা প্লেটোর মতােই পুরনাে। প্লেটোর বিপাবলিক ছিল পরবর্তী দার্শনিকদের জন্য একটি কাল্পনিক মডেল। যিনি একটি আদর্শের আলােকে এই বিশ্ব সম্পর্কে ভাবেন— তা বুদ্ধিবৃত্তিক, শিল্প, প্রেম, সুখ বা অন্য যেকোনােভাবে হােক না কেন— তিনি অবশ্যই দুঃখ ভােগ করবেন। তিনি শক্তিমান হলে, তার সৃজনী দর্শন বুঝার জন্য মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার একটি জরুরি প্রত্যাশা তার মধ্যে থাকবে। এই প্রত্যাশাই নৈরাজ্যবাদ ও সমাজতন্ত্রের উদ্যোগী ব্যক্তিদের প্রাথমিক শক্তি ছিল। এক্ষেত্রে কিছুই নতুন নয়। নৈরাজ্যবাদ ও সমাজতন্ত্রের নতুন বিষয় হলাে, মানুষের দুঃখকষ্ট ও আদর্শ সম্পর্কে চিন্তাবিদদের প্রত্যাশা থেকে গড়ে ওঠা শক্তিশালী রাজনৈতিক আন্দোলনকে সমর্থন জোগানাে। সমাজতন্ত্র ও নৈরাজ্যবাদের গুরুত্ব এখানেই। যারা সামাজিক বিশৃঙ্খলা জিইয়ে রাখার কাজ করে, এটা তাদের জন্য বিপজ্জনক।
বার্ট্রান্ড রাসেল
বার্ট্রান্ড আর্থার উইলিয়াম রাসেল জনপ্রিয় পরিচিতি বার্ট্রান্ড রাসেল। জন্ম ১৮৭২ সালে ইংল্যান্ডে। লিখেছেন বহু মননশীল বই। বইয়ের বিষয় ছিল শিক্ষা, বিজ্ঞান, রাজনীতি, সমাজতত্ত্ব প্রভৃতি। কিন্তু তিনি বিশ্বে সমধিক পরিচিত দার্শনিক হিসাবে, পাশাপাশি গণিতবিদ হিসাবেও ছিল তাঁর বিশ্বখ্যাতি। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে শান্তিবাদীর ভূমিকার জন্য কারাদণ্ড ভােগ করেন। পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের সপক্ষে এবং ভিয়েতনাম যুদ্ধের বিরুদ্ধে তাঁর ছিল প্রতিবাদী সংগঠকের ভূমিকা। সাহিত্যে নােবেল পুরস্কার পান ১৯৫০-এ। প্রচলিত প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের বিপরীতে দাঁড়িয়ে নিরীশ্বরবাদ প্রচারে উদ্যোগী ও উদ্যমী ছিলেন তিনি। তাঁর উল্লেখযােগ্য গ্রন্থসমূহের মধ্যে রয়েছে ‘প্রিন্সিপলস অফ ম্যাথমেটিকস্, এ. এন. হােয়াইটহেড-এর সঙ্গে যৌথভাবে লিখিত ‘প্রিন্সিপিয়া ম্যাথমেটিকা’, ‘প্রবেলমস্ অফ ফিলসফি’, দ্য এ. বি. সি. অফ রিলেটিভিটি', দ্য অ্যানালইসিস্ অফ ম্যাটার', “পলিটিক্যাল আইডিয়ালস’, ‘হিস্ট্রি অফ ওয়েস্টার্ন ফিলসফি প্রভৃতি। রাসেল প্রয়াত হন ১৯৭০-এ আটানব্বই বছর বয়েসে।