কল্পবিজ্ঞানে বর্ণিত এবং সেই বর্ণনার চলচ্চিত্রায়ণ প্রত্যক্ষ করে মানুষের মনে রােবট যন্ত্রটি সম্বন্ধে একটি অবাস্তব ধারণার সৃষ্টি হয়েছে। সেই ধারণাটিকে ভেঙে একটি প্রকৃত রােবট, বিশেষ করে শিল্পে ব্যবহৃত রােবট সম্পর্কে একটি স্বচ্ছ ধারণা সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যেই এই বইটি। রােবটবিজ্ঞান এখন অনেক উন্নত। কিন্তু এই বই শুধুমাত্র প্রথম ও দ্বিতীয় প্রজন্মের রােবটকে ঘিরেই। এর কারণ এই বইয়ের পাঠক হিসেবে ধরা হয়েছে তাদেরকে যারা হয়ত বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশােনা করেন নি বা করলেও তা রােবট সংক্রান্ত নয়, নয় বৈদ্যুতিন বা কম্পিউটার বিজ্ঞান সংক্রান্তও। এক কথায় বলা যায় সেই সমস্ত পাঠক যাদের উৎসাহ এবং তাগিদ রয়েছে যে কোনাে অজানা বিষয়ে জ্ঞান অর্জনের। এখনকার রােবটগুলির রয়েছে দেখার জন্য চোখ অর্থাৎ ক্যামেরা, অনুভব করার জন্য অনুভূতিহীন টাচ সেন্সর। সৃষ্টি হয়েছে রােবট-উপযুক্ত প্রােগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ যার সাহায্যে মানুষ-রােবট সংযােগ হয়েছে সহজতর। এছাড়াও এখনকার অনেক রােবট সিস্টেমে রােবট নিজেই তার ভুলভ্রান্তি এবং সমস্যা নিরূপণ করতে এবং সেই সংবাদ তার মনুষ্য অবেক্ষককে জানিয়ে দিতে সক্ষম। এই বইটি পড়বার পর পাঠকের মনে যদি রােবট সম্বন্ধে আরাে গভীর তথ্য বা জ্ঞান আহরণের ইচ্ছা ও উৎসাহ জন্মায়, আমার এই ক্ষুদ্র উদ্যোগের সেটাই হবে বিশাল প্রাপ্তি। ভাবা যেতে পারে, বাংলা সাহিত্যে বঙ্কিমচন্দ্রকে পড়তে গেলে যেমন প্রথমে বিদ্যাসাগরের বর্ণ-পরিচয়'-কে আত্মস্থ করতেই হবে, সেরকমই রােবটিক্সের উচ্চতর জ্ঞান-আহরণের জন্য এই বই রােবটিক্সের বর্ণ-পরিচয়ের কাজ করবে বলে আশা রাখি।
সৌমেন সাহা
সৌমেন সাহা, জন্ম ২২ সেপ্টেম্বর ১৯৮০ সালে। খুলনা সেন্ট-জোসেফস্ উচ্চ বিদ্যালয় হতে মাধ্যমিক এবং খুলনা সরকারি সুন্দরবন আদর্শ মহাবিদ্যালয় হতে বিজ্ঞান বিভাগে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সরকারি পিসি কলেজ, বাগেরহাট হতে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি যুক্তরাজ্যের লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে লন্ডন কলেজ অব বিজনেস ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড কম্পিউটিং হতে কম্পিউটার সায়েন্সে ডিপ্লোমাসহ বি.এসসি ডিগ্রি অর্জন করেন। জনপ্রিয় বিজ্ঞান-লেখক হিসেবে এ পর্যন্ত বাংলাদেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক, মাসিক ও সাপ্তাহিক বিজ্ঞান পত্র-পত্রিকায় তাঁর প্রকাশিত লেখার সংখ্যা প্রায় দুই শতাধিক। তাঁর লেখা প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৭০-এর অধিক। তিনি খুলনার ঐতিহ্যবাহী প্রাণিক বিজ্ঞানাগার খুলনার কেন্দ্রীয় শাখার সাধারণ সম্পাদক এবং একাধিকবার বিজ্ঞান প্রকল্প উদ্ভাবনের জন্য জাতীয়ভাবে পুরস্কৃত হয়েছেন। বর্তমানে তিনি একটি বেসরকারি সংস্থা ঢাকায় কর্মরত আছেন। নিত্যদিনের জীবিকার গ্রাসাচ্ছাদনের বাইরে তার পুরােটা সময়ই লেখালেখি এবং প্রধানত বিজ্ঞানবিষয়ক লেখালেখিতে নিবেদিত। তার একমাত্র শখ বিজ্ঞান, গণিত, ইতিহাস বিষয়ক বই পড়াশােনা করা ও গবেষণা করা।