রাইফেল রোটি আওরাত
বুক রিভিউ ১০ বই: রাইফেল রোটি আওরাত লেখক: আনোয়ার পাশা প্রচ্ছদ ও অলংকরণ:কাইয়ুম চৌধুরী পৃষ্ঠা:১৮০ মুদ্রিত মূল্য:২৫০ প্রকাশনী: স্টুডেন্ট ওয়েজ প্রথম মুদ্রণ:১৯৭৩ . রাইফেল রোটি আওরাত এর প্রথম লাইন হচ্ছে, "বাংলাদেশে নামলো ভোর।" উপন্যাসটি ভোর দিয়ে শুরু আর রাত দিয়ে শেষ হয়েছে।উপন্যাসটির মূল চরিত্রের সুদীপ্ত শাহিন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগের একজন অধ্যাপক। ১৯৪৭ এর দেশ ভাগের পর পূর্ববাংলায় চলে আসেন সুদীপ্ত শাহিন। কিন্তু এখানে এসে সুদীপ্ত নাম নিয়ে ভোগান্তিতে পড়ে যান। যার কারনে চাকরী নিতে পছন্দের নামটি পরিবর্তন করেতে হয়। । স্ত্রী, এক পুত্র এবং দুই কন্যা নিয়ে তাঁর সংসার। পঁচিশে মার্চ রাতে যখন পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীরা ঘুমন্ত বাঙালিদের উপরে নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালায় তখন তাদের বাড়িতেও আক্রমণ চালানো হয়েছিল। অবাক করা ব্যাপার সুদীপ্ত শাহিন এবং তার পরিবারের সবাই বেঁচে যায়।দুটো দিন এবং দুটো রাত খাটের তলাতেই কোনমতে লুকিয়ে ছেলেমেয়ে নিয়ে না খেয়ে কাটিয়ে দেন তিনি তারপর লুকিয়ে এক বন্ধুর বাসায় চলে যান । কিন্তুু সেখানে গিয়ে জানতে এখনই ওই বাড়িতে আক্রমণ হবে। তাই বন্ধুর পরিবার ও নিজের পরিবার নিয়ে যায় বন্ধুর এক দূরসম্পর্কের এক চাচার বাড়িতে।সেখানে গিয়ে দেখেন সেই চাচা স্বয়ং রাজাকার। . ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনোয়ার পাশার উপন্যাস "রাইফেল,রোটি,আওরাত" এর প্রথম পরিচয় হচ্ছে এটি বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখা প্রথম উপন্যাস।একটি জীবন্ত ইতিহাস। উপন্যাসের ভূমিকায় কাজী আবদুল মান্নান লিখেছেন, "মানুষ এবং পশুর মধ্যে বড় একটা পার্থক্য হচ্ছে,পশু একমাত্র বর্তমানকেই দেখে,মানুষ দেখে অতীত,বর্তমান এবং ভবিষ্যতকে এক সঙ্গে বিবেচনা করে।যখন কোন ব্যক্তি এবং সমাজ একমাত্র বর্তমানের মধ্যেই আবর্তিত হতে থাকে তখন সর্বনাশের ইশারা প্রকট হতে থাকে"।বইটি নিয়ে সাহিত্যিক আবুল ফজল লিখেছেন- "বাংলাদেশের মাটিতে আগামীতে যারা জন্মগ্রহণ করবে,তারা এ দেশের ইতিহাসের এক দুঃসহ ও নৃশংস অধ্যায়ের এ নির্ভেজাল দলিল পাঠ করে নিঃসন্দেহে শিউরে উঠবে।"বইটিতে লেখক রাইফেল রোটি আওরাত বইয়ের নামে প্রকাশ করেছেন পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীদের চরিত্র- “রোটি খেয়ে গায়ের তাকত বাড়াও, রাইফেল ধ’রে প্রতিপক্ষকে খতম কর, তারপর আওরাত নিয়ে ফুর্তি কর।”বইটিতে লেখকের অনবদ্য উপস্থাপন ভঙ্গী, শব্দচয়ন প্রবল হৃদয়গ্রাহী। # বইবাজার_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_মার্চ_২০১৯