এপিজে আবদুল কালাম (১৯৩১-২০১৫) ভারতের সবচেয়ে বিশিষ্ট বিজ্ঞানীদের মধ্যে একজন ছিলেন। ভারতের প্রথম উপগ্রহ যান, এসএলভি-৩ এবং কৌশলগত ক্ষেপণাস্ত্রের উন্নয়ন ও কার্যকারিতায় তার ভূমিকা ছিল। টেকনােলজি ইনফরমেশন, ফোরকাস্টিং অ্যান্ড এসেসমেন্ট কাউন্সিলের চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি ইন্ডিয়া ভিশন ২০২০ এর অগ্রদূত ছিলেন। ইন্ডিয়া ভিশন ২০২০ হলাে ভারতকে ২০২০ সালের মধ্যে একটি অর্থনৈতিকভাবে উন্নত জাতি হিসেবে রূপান্তর করার রােডম্যাপ। এর অধীনে দেশব্যাপী বাস্তবায়নের জন্য একটি উন্নয়ন ব্যবস্থা। হিসেবে পিইউআরএ (প্রবেশন অব আরবান এমেনিটিস ইন রুরাল এরিয়াজ)-এর উপর দৃষ্টিপাত করা হয়েছে। ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন এবং ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনে কালাম বিভিন্ন পদবীতে কাজ করেছেন এবং একজন মন্ত্রীর পদমর্যাদায় ভারত সরকারের বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টাদের প্রধান হয়েছিলেন। ২০০২ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত ভারতের প্রেসিডেন্ট কালাম আটত্রিশটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানীয় ডক্টরেট ডিগ্রী পেয়েছেন এবং দেশের সর্বোচ্চ তিনটি বেসামরিক সম্মাননা - পদ্ম ভূষণ (১৯৮১), পদ্ম বিভূষণ (১৯৯০) এবং ভারত রত্ন (১৯৯৭) উপাধি পেয়েছেন। কালাম বিভিন্ন বিষয়ের ওপর পনেরটি বই লিখেছেন, যেগুলাে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে। তার সবচেয়ে উল্লেখযােগ্য কাজগুলাে হলাে উইংস অব ফায়ার, ইন্ডিয়া ২০২০: এ ভিশন ফর দ্য নিউ মিলেনিয়াম, টার্গেট থ্রি বিলিয়ন এবং বিয়ন্ড ২০২০: এ ভিশন ফর টুমােরাে'স ইন্ডিয়া।
সৃজন পাল সিং আহমেদাবাদের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব মেনেজমেন্টে পড়ালেখা করেছেন। সেখানে সবচেয়ে ভাল অলরাউন্ডার হিসেবে তিনি স্বর্ণ পদক পান এবং তিনি স্টুডেন্ট কাউন্সিলের প্রধান ছিলেন। প্রযুক্তিগত মধ্যবর্তিতা ব্যবহার করে একটি স্বচ্ছ সর্বজনীন বণ্টন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার জন্য নক্সালাইট-প্রভাবিত এলাকায় অবস্থিত বােস্টন কনসাল্টিং গ্রুপে (বিসিজি) কাজ করেছেন। সুইজারল্যান্ডে সেন্ট গ্যালেন সিম্পােজিয়ামে গ্লোবাল লীডারস অব টুমােরাে'র একজন হিসেবে তিনি মনােনীত হয়েছিলেন। সৃজন সক্রিয়ভাবে ভারতের গ্রাম্য অঞ্চলগুলােতে ভ্রমণ করেছেন এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উদ্যোগে টেকসই উন্নয়ন ব্যবস্থার অধ্যয়ন এবং বিবর্তনে অংশগ্রহণ করেছেন। দীর্ঘস্থায়িত্বতা এবং উন্নয়নের উপর তাঁর অনেকগুলাে লেখা স্বনামধন্য অনেক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। তিনি ড. কালামের সাথে উন্নতমানের শিক্ষা প্রচারে কাজ করেছেন, যা নবীনদের খুব উৎসাহিত করেছিল।
এ. পি. জে. আব্দুল কালাম
ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি আবুল পাকির জইনুল আবেদিন আবদুল কালামের জন্ম ১৯৩১ সালে, তৎকালীন মাদ্রাজের (বর্তমানে তামিলনাড়ু) দ্বীপশহর রামেশ্বরমে, এক মধ্যবিত্ত তামিল পরিবারে। পিতা জইনুল আবেদিন, মা আশিয়াম্মা। প্রথাগত শিক্ষান্তে, ড. কালাম ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা ও প্রতিরক্ষা উন্নয়ন পরিকল্পনার কাজে নিজেকে নিয়ােজিত করেন। প্রতিরক্ষা বিজ্ঞানী ও ক্ষেপণাস্ত্র যন্ত্রবিদ রূপে তার খ্যাতি অচিরেই প্রতিষ্ঠিত হয়।
অগ্নি, পৃথ্বী, আকাশ, ত্রিশুল, নাগা ইত্যাদি ক্ষেপণাস্ত্র নির্মাণে তার অবদান ও কৃতিত্ব অপরিসীম। তার কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি পেয়েছেন ভারতের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান ‘ভারতরত্ন’। ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা ও বিজ্ঞানচর্চায় তার ভূমিকা বহুক্ষেত্রেই পথিকৃতের। প্রয়াণ: ২৭ জুলাই ২০১৫।
সহলেখক অরুণ তেওয়ারি একযুগের বেশি সময় ড. এ পি জে আবদুল কালামের অধীনে। হায়দরাবাদের ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ল্যাবরেটরিতে (ডি আর ডি এল) কাজ করেছেন। শ্ৰীতিওয়ারি হায়দরাবাদের কার্ডিওভাসকুলার টেকনােলজি ইনসটিটিউটের অধিকর্তা।