বাংলাদেশ রাষ্ট্রের পুনর্গঠনের যে সুযোগ ছাত্র—জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে, তা সম্ভবত এ জাতির ইতিহাসে আর কখনও আসেনি। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ নামক একটি নতুন রাষ্ট্রের জন্ম হলেও সে সময়কার কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব একটি আধুনিক, উন্নত ও অগ্রসর রাষ্ট্র গঠনের উপযোগী ছিল না। তদুপরি ছিল প্রতিবেশী দেশের সর্বগ্রাসী প্রভাব। এর বিপরীতে বর্তমানের বিপ্লবের মূল শক্তি ছাত্ররা চিন্তায় অনেক অগ্রসর এবং স্বাধীন। তারা একটি স্বাধীন রাষ্ট্রে বৈশি^ক মূল্যবোধ নিয়ে বেড়ে উঠেছে। জুলাই বিপ্লবের মূল শক্তি ছিল জাতির বিভাজন রেখাগুলোকে মুছে ফেলে ঐক্যবদ্ধ হওয়া। এই প্রজন্ম ব্যক্তি বা দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে সক্ষম। পাশাপাশি যিনি বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের হাল ধরেছেন, তিনি তাঁর ভিশন, মেধা ও দক্ষতার জন্য বিশ^ব্যাপী অত্যন্ত সুপরিচিত। সর্বশক্তি দিয়ে তিনি দেশকে একটি অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাইবেন। এটিই তার জন্য স্বাভাবিক।
এই পরিস্থিতিতে ছাত্র, জনতা, পেশাজীবী — সকল মহল থেকেই রাষ্ট্র সংস্কারের দাবি উঠেছে, যাতে আমাদেরকে আবার আগের স্বৈরাচার, দুর্নীতি ও জনগণকে জিম্মি করার বিষচক্রে ঢুকে যেতে না হয়। সরকার ইতোমধ্যে এই বিষয়ে বেশকিছু কমিশনও গঠন করে দিয়েছে। তবে রাষ্ট্র সংস্কারের বিষয়টি ব্যাপক এবং এতে সর্বস্তরের মানুষের গভীর অংশগ্রহণ প্রয়োজন। সেই চাহিদার কিছুটা হলেও মেটানোর জন্য এই বইটি লেখা হয়েছে।
বইটি শুরু করা হয়েছে প্রস্তাবিত রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্দেশ্যকে পরিষ্কারভাবে বর্ণনা করার মাধ্যমে। রাষ্ট্র সংস্কার করার মাধ্যমে আমরা কেমন রাষ্ট্র চাচ্ছি, তার একটি সুস্পষ্ট রূপরেখা এই অধ্যায়ে দেওয়া হয়েছে।
আমিনুল মোহায়মেন
আমিনুল মােহায়মেন পেশায় কম্পিউটার প্রকৌশলী, বিশ বছর ধরে পরামর্শক হিসেবে কাজ করছেন বাংলাদেশ সরকারের অর্থ বিভাগসহ অন্যান্য মন্ত্রণালয়ে, প্রধানত: সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনা অটোমেশনে। জন্ম ঝিনাইদহে, সেখানেই মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পড়াশােনা এবং দুই পরীক্ষাতেই সম্মিলিত মেধাতালিকায় স্থান পাওয়া। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি, ভালাে না লাগায় বছর খানেক পর বৃত্তি নিয়ে মিসরে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে যাওয়া। ছাপার অক্ষরে ‘অপরাহু’ তার প্রথম বই।