অকপটে নিজেকে বিশ্লেষণ করে তাকে সবার কাছে তুলে ধরার অমোঘ আকাঙ্ক্ষা সবার থাকে না। মাঝে মাঝে যদিও বা বিশ্লেষণের খেয়াল তাড়া করে, তবু তাকে লোকচক্ষুর আড়ালে রাখতে পারাই জীবনের ভোগ সুখের সংজ্ঞা কারো কাছে। কিন্তু একে দিনের আলোর মত ছড়িয়ে দিয়ে জীবনকে অবমুক্ত করার চেতনাই মানুষকে কবি করে তোলে কিংবা এমন চেতনার মানুষই বুঝি কবি হন! কবি হয়ত মানুষ নন, কেন না, মানুষের তো লুকোনোর দায় থেকে যায়। কবি শামীম আহমেদ কতটা কবি অথবা শুধুই মানুষ কিনা, সেই বিশ্লেষণ দুরূহ। ‘নিমিষেই নিষিদ্ধ তুমি’ যদি কাব্যগ্রন্থে পাপ-পূণ্যের বাইরেও জীবনের নিজস্ব গতি ও খেয়াল আছে, সেই ভাবনাকে আগলে চলার স্পৃহা প্রকাশিত হয়েছে, এমনটা নির্দ্বিধায় বলা যায়! জীবনকে অতটা সরল রেখায় চলতে দেওয়ার সাহস তো সাধারণ মানুষের থাকে না, থাকে কবির, যা ঠাই পায় তাঁর সৃষ্টিশীল কাব্যের পঙক্তিমালায়। শামীম আহমেদ এবং তাঁর কবিতা তাই পাপ-পূণ্যের বাইরে চলা জীবনের নিজস্ব গতিময়তা ও খেয়ালেরই প্রতিচ্ছবি।
মুনতাসীর মামুন
মুনতাসীর মামুনের জন্ম ১৯৫১ সালে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ থেকে এম. এ.. পিএইচ. ডি. ডিগ্রি লাভ করেছেন। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক। লেখালেখি করছেন ১৯৬৩ সাল থেকে। ছাত্রজীবনে জড়িত ছিলেন ছাত্র-আন্দোলনে এবং ১৯৬৯ সাল থেকে এ-পর্যন্ত অংশগ্রহণ করেছেন প্রতিটি সাংস্কৃতিক ও গণআন্দোলনে। স্বাধীন বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত প্রথম ডাকসু নির্বাচনে তিনি নির্বাচিত হয়েছিলেন সম্পাদক। একই সময়ে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতি সংসদের সভাপতি। তাঁর সম্পাদনায় প্রথম প্রকাশিত হয় ডাকসু’র মুখপত্র ছাত্রবার্তা। এছাড়াও বাংলাদেশ লেখক শিবির ও বাংলাদেশ লেখক ইউনিয়নের ছিলেন তিনি প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও যথাক্রমে প্রথম যুগ্ম আহ্বায়ক ও যুগ্ম সম্পাদক। ঢাকা নগর জাদুঘরের তিনি অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু জাদুঘরের উদ্যোক্তাদের মধ্যে ছিলেন তিনিও একজন । এছাড়াও তিনি জড়িত বিভিন্ন একাডেমিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে। বাংলাদেশে লেখালেখির জগতে মুনতাসীর মামুন একটি বিশিষ্ট নাম। সমসাময়িককালে তার মতাে পাঠক নন্দিত লেখক খুব কমই আছে। গল্প, কিশােরসাহিত্য, প্রবন্ধ, গবেষণা, চিত্রসমালােচনা, অনুবাদ ইত্যাদিতে তার স্বচ্ছন্দ বিচরণ ও সেই সাথে রাজনৈতিক ভাষ্যে অর্জন করেছেন বিশেষ খ্যাতি । উল্লিখিত প্রতিটি ক্ষেত্রেই তার একাধিক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ১৭০। বাংলা একাডেমী পুরস্কার, লেখক শিবির পুরস্কার, অগ্রণী ব্যাংক পুরস্কার, ড. হিলালী স্বর্ণপদক পুরস্কার, প্রেসিডেন্ট পুরস্কার (১৯৬৩), মার্কেন্টাইল ব্যাংক স্বর্ণপদক ইত্যাদিতে তিনি সম্মানিত। স্ত্রী ফাতেমা মামুন ছিলেন একজন ব্যাংকার ।