এতদিন শুধু শুনে এসেছি এই কুরআন জীবন্ত মুযিজা। পূর্বে বৈজ্ঞানিক বিষয়াবলি পরিচিতি পাবার বদৌলতে ডা. মরিস বুকাইলির বই ‘বাইবেল, কুরআন ও বিজ্ঞান’ এবং ডা. জাকির নায়েকের লেকচার থেকে এটা দেখেছি। কুরআনের সাথে বিজ্ঞান বা কুরআনের সাথে কুরআনের স্রষ্টা ও তার সমস্ত সৃষ্টি এবং তাদের প্রাকৃতিক নিয়ম মিলবে এটাই আল্লাহর সুন্নত (নিয়ম-পদ্ধতি)। কিন্তু বৈজ্ঞানিকের ভুল গবেষণা, ভুল ডাটা, আংশিক ডাটা, বায়াস বা আদর্শিক পক্ষপাতিত্ব, আদর্শিক ফান্ডিং, ভুল মেথডোলজির (পদ্ধতি) কারণে অনেকে উপসংহারে এসে ভুল ফলাফল উপস্থাপন করে। বিজ্ঞানে তখন অবৈজ্ঞানিক আদর্শ ও রাজনীতি ঢুকে যায়।
আবার নতুন আবিষ্কারের ফলে বহু পুরাতন বৈজ্ঞানিক গবেষণার ফল ভুল প্রমাণিত হয়, , তখন আবার কুরআনের ভুল ধরতে আসে অনেকে। বিজ্ঞান, বৈজ্ঞানিক আর আদর্শ যে এক নয় এটা অনেকেই ভুলে যায়। মানুষ ভুল করতে পারে, কিন্তু আল্লাহর কালাম ভুল হতে পারে না, স্রষ্টার কালামের সাথে তার সৃষ্টির নিয়মেও ভুল হয় না; কিছু ব্যতিক্রম রয়েছে যা আমাদের সীমাবদ্ধতা দেখায় (মুযিজা, ছেলে মেয়ে হয়ে যায়, মেয়ে ছেলে হয়ে যায়, ক্লিনিক্যালি ডেথ), আর স্রষ্টার নিরঙ্কুশ ক্ষমতার নিদর্শন হিসেবে থাকে।
কিন্তু এমন একটি মুযিজা রয়েছে যাকে ভুল প্রমাণিত করা যায় না, বরং এর সৌন্দর্যে বিমোহিত হতে হয়। কারণ ৬০০ পৃষ্ঠার মতো একটা আস্ত কিতাব মুখে মুখে মুখস্ত হয়, এমন স্বতস্ফুর্ত কিতাবের এমন এমন বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা কখনো কোনো মানুষের পক্ষে করা সম্ভব নয়, পনেরশ বছর পূর্বেও সম্ভব না, পরেও না! ৬০০ পৃষ্ঠা, তাও আবার কথাবার্তার মতো স্বতস্ফুর্ত বক্তৃতায়!
সেই মুযিজার পরিচয় পাই উস্তাদ নোমান আলী খানের বক্তৃতা থেকে। পূর্বে মুজিযার কথা শুনলেও, এই প্রথম দেখতে পাই, পড়তে পাই। আহা! “আল্লাহ সুন্দর, তিনি সৌন্দর্যকে ভালোবাসেন”—এই হাদীসের কি অপূর্ব নমুনা কুরআনের পরতে পরতে। যেন সৌন্দর্যগুলো ভোরের শিশির কণার মতো ঠিকরে ঠিকরে পড়ছে তাঁর কালামের পাতায় পাতায়। এই সৌন্দর্য কেবল গঠনে নয়, এর সৌন্দর্য ছড়িয়ে আছে এর ভাব, গঠন, বিষয়, প্রজ্ঞা, শিক্ষা, মিল-অমিল, ধারাবাহিক, উল্টো, একই সূরায়, জোড় সূরায়, গুচ্ছ সূরায়, আবার পুরো কুরআন জুড়ে! এই দরিয়ার গভীরতা যে অন্তহীন! প্রতিনিয়ত আলেমরা এই সমুদ্রের গভীরে যাচ্ছে, আর অল্প অল্প অলঙ্কারের বিস্ময় কুড়িয়ে আনছে! সুবহানাল্লাহ!
নোমান আলী খান
Title :
কুরআনের বিস্ময়কর ভাষাতাত্ত্বিক অলঙ্কার [ডিভাইন স্পিচ]