সন্ধ্যা থেকে মুষলধারে বৃষ্টি ছিল। আধ ঘণ্টার মতো হয়েছে বৃষ্টি কমে গেছে। এখনো গুড়ি গুড়ি ঝরলেও সেটাকে উপেক্ষা করে রাস্তায় হেঁটে চলা লোকের সংখ্যা নেহাত কম না। থেকে থেকে বিদ্যুৎ চমকানিতে সার্চ লাইটের মতো আকাশের কিছু অংশ আলোকিত হলেও সেটাতে ভয় পাওয়ার মতো কিছু নেই। এ ধরনের বিদ্যুৎ চমকানিতে বজ্রপাত ঘটে না। গুলশান ১-এর একটা অফিসে ইন্টারভিউ দিতে বিকেলের মধ্যেই চলে এসেছিল দাউদ আহমেদ। আমেরিকা থেকে ফেরত আসার পর গত তিন মাসে প্রায় ছয় জায়গায় ইন্টারভিউ দিয়েছে। এই সাত নাম্বার ইন্টারভিউটা লাকি হয় কি না সেটা ভাবতে ভাবতেই রেইন কোট চেপে দাউদ রাস্তায় নেমে পড়েছে। গত তিন মাস বনশ্রীর ফারাজি হাসপাতালের পাশ ঘেঁষে রাস্তা দিয়ে কিছু ভিতরে ঢুকে তিন নাম্বার রোডের মাঝামাঝি জায়গায় একটা মেসে থাকছে ও। ইন্টারভিউ দেওয়া অফিস থেকে নেমে বামে প্রায় ত্রিশ গজ হেঁটে একটা সিগারেটের দোকান থেকে পাঁচটা সিগারেট কিনে তার থেকে একটা ধরিয়ে বেশ লম্বা টান দিলো দাউদ। বাকি চারটে সিগারেট প্যাকেটসহ প্যান্টের বাম পাশের পকেটটায় ঢুকিয়ে রাস্তা থেকে ডানে মোড় নিয়ে গুলশান অ্যাভিনিউ এর দিকে যাবে বলেই ঠিক করেছে। তারপর নতুন বাজার পর্যন্ত হেঁটে যেয়ে একটা বাস ধরে ফারাজি হাসপাতাল পর্যন্ত চলে যাবে। বাম হাতের রেইন কোটটা খানিক উঁচু করে রিস্ট ওয়াচে সময়টা দেখে নিলো। আটটা বেজে তেতাল্লিশ মিনিট। অন্য যেকোনো দিন এ জায়গাগুলোতে বেশ মানুষজন থাকলেও আজকে আবহাওয়ার কারণে খুব বেশি মানুষ দেখা যাচ্ছে না। ফুটপাথের গা ঘেঁষে রাস্তার দু পাশে কালো পানি জমে আছে। রাস্তার মাঝখানটা খানিক শুকনো থাকায় ক্ষেতের আইলের মতো পথ তৈরি হয়েছে।