ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ তির সামনে ছুটে যাওয়ার আগে কিছুটা পিছিয়ে যায়। ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাওয়ার পথে যে-কোনও সমাজের মাঝেমাঝে ঐতিহ্য ও ইতিহাসের দিকে পিছু ফিরে দেখা দরকার। আমাদের দেশের অনতি-অতীতের পুনর্দর্শন ও পুনর্বিচার নিয়েই সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বর্ণাঢ্য, বেগবান উপন্যাস ‘প্রথম আলো’। উপন্যাসটিপতে আছেন রবীন্দ্রনাথ, বিবেকানন্দ, জগদীমচন্দ্র বসু, ভগিনী নিবেদিতা, অবনীন্দ্রনাথ, গিরিশিচন্দ্র ঘোষ, অর্ধেন্দু মুস্তাফীর তমো খ্যাতনামা সব ঐতিহাসিক চরিত্র। তা সত্ত্বেও ‘প্রথম আলো’র মূল নায়ক- সময়। আঠারোশো তিরাশি থেকে উনিশশো সাত পর্যন্ত যে-সময়কাল বিস্তৃত। যখন হঠাৎ যেন ঘুম ভেঙে নবজাগরিত কিছু মানুষ আবিষ্কার করছে দেশ নামের এক ভাবসত্তাকে, অনুভব করছে পরাধীনতার গ্লানি। রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দের ধর্ম আন্দোলন, মহেন্দ্রলাল সরকারদের বিজ্ঞানমনস্ক চিন্তাধারা, পেশাদারি রঙ্গমঞ্চ ও প্রবাদপ্রতিম শিল্পীদের ভূমিকা, রবীন্দ্রনাথের কবিজীবনের নানা রূপান্তর, কংগ্রেসের প্রবীণ নেতাদের সঙ্গে নবীনদের মতবিরোধ, সন্ত্রাসবাদী আন্দোলনের সূচনা, দুর্ভিক্ষ, মহামারী, হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক ভেদরেখা সৃষ্টি ইত্যাদি ঐতিহাসিক প্রসঙ্গ অনুপুঙ্খভাবে লিপিবদ্ধ হয়েছে ‘প্রথম আলো’ উপন্যাসে। মহাকাব্যিক ব্যাপ্তি ও বিশালতা নিয়ে এই উপন্যাসে কাহিনি পার্বত্য ত্রিপুরা রাজ্য থেকে ছড়িয়ে পড়েছে ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী কলকাতায়, তারপর সমগ্র ভারতে। আধুনিক বাংলা সাহিত্যে ‘প্রথম আলো’ পাঠকচিত্ত জয় করেছে কবেই, কালজয়ের সামর্থ্যেও সে বলীয়ান।
সূচীপত্র মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও জাতীয় ঐক্য স্বৈরাচার থেকে আমরা এখন কতদূরে গণতন্ত্রের কাপালিক উপাসক এবং আমরা যে সাধনা সত্য হবার নয়, প্রিয় হবার ইতিহাস বিকৃতকারীরা ৭ই জুন থেকে শিক্ষা নিন গণতন্ত্রের নাস্তি আরাধনা বাংলাদেশের বাঙালীর অভিজ্ঞান সংকট যেখানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নামহীন গোত্রহীন ধর্মের রাজনীতি ও জাতীয়তাবাদ সমাজ বিকাশের জন্য গণতন্ত্র অপরিহার্য বঙ্গবন্ধুকে কেন হত্যা করা হয়েছিল রবীন্দ্রনাথ, না-রবীন্দ্রনাথ ধারার প্রকৃতি সিপিবি’র বিভক্তির উৎস সন্ধানে মত প্রকাশের স্বাধীনতার সীমার সন্ধানে ইতিহাসের সঙ্গে কানামাছি খেলার খেসারত ইতিহাসের নব ধারাপাত কতটা ধারাবাহিক বাঙালী জাতীয়তাবাদ ও বাংলা সংস্কৃতি আসিছে অন্ধ স্বদেশ দেবতা ফাঁসীর মঞ্চ অনুসরি এদের চিনতে যেন ভুল না করি ইতিহাস চর্চার মানসিক উপাদান আদর্শমুক্ত রাজনীতি ছদ্মবেশী-একনায়কত্বের অবসান
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
একজন বাঙালি পাঠক হয়ে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়কে এড়িয়ে যাওয়া ভীষণ শক্ত। প্রথম আলো থেকে নীরা, কবিতা থেকে গল্প,উপন্যাস, ভ্রমণ কাহিনী, প্রবন্ধ, ছোটগল্প, দুহাতে লিখেছেন।কেবল লিখেছেন বললে ভুল হবে! লিখেছেন, আলোচিত হয়েছেন,সমালোচিত হয়েছেন কিন্তু অসংখ্য পাঠকের হৃদয়ে থেকেছেন। অসংখ্য পাঠক তাকে তুলে নেয়, পাঠ করে।
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় একজন প্রথিতযশা বাঙালি সাহিত্যিক। ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যুর পূর্ববর্তী চার দশক তিনি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব হিসাবে সর্ববৈশ্বিক বাংলা ভাষার জনগোষ্ঠীর কাছে ব্যাপকভাবে পরিচিত ছিলেন।
জন্ম: ৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৩৪, ফরিদপুর জেলা
মারা গেছেন: ২৩ অক্টোবর, ২০১২, কলকাতা, ভারত
স্বামী বা স্ত্রী: স্বাতী বন্দ্যোপাধ্যায় (বিবাহ. ১৯৬৭–২০১২)
সন্তান: সৌভিক গঙ্গোপাধ্যায়
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার: আনন্দ পুরস্কার (১৯৭২, ১৯৮৯); সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার (১৯৮৫)
কুইজ: সুনীলের লেখা প্রথম বই কোনটি?