ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ বইয়ের ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ বই সম্পর্কে লেখা্টা একটা প্রচলিত রীতি। তবে এই রীতি যতটা বইকে পরিচিত করবার উদ্দেশ্য তারচেয়ে বেশি চটকদার কথা-বার্তায় বইটিকে পাঠকের কাছে আকর্ষণীয় করবার প্রয়োজনে। তাই শুরুতেই এই প্রবণতা পরিহার করছি। ‘প্রযত্নে-হন্তা’ মূলত ১০টি ছোটগল্পের সংকলন। আমি ২৪ বছরের এক তরুণ। জেমস জয়েস কিংবা সুকান্ত ভট্টাচার্যের মত বিস্ময়কর প্রতিভাবান কেউ নই যে এই বয়সেই লেখার গভীরতা-সম্মোহনীতায় বয়সকে আড়াল করতে সক্ষম হব। বই প্রকাশ করাটা এখন অনেকটা জাতে ওঠার একটা মাণদন্ডে পরিণত হয়েছে। ‘প্রযত্নে-হন্তা’ সেই অর্থে গড্ডলিকারই নামান্তর। ১০ টি গল্পের মধ্যে এমন একটি গল্পও নেই যা পড়ে মুগ্ধতা সৃষ্টি হবে কিংবা না পড়লে সাহিত্যপ্রেমীদের বিশাল কোন অপূর্ণতা রয়ে যাবে। সাধারণ পাঠকের বিবেচনায় গল্পগুলো জটিল, দুর্বোধ্য, ভাষাও একটু কঠিন। উচ্চস্তরের পাঠক বলবেন গল্পের মধ্যে গল্প জিনিসটাই নেই, ভাষা দুর্বল, মাধুর্যহীন এবং বাক্যবিন্যাসে অসংখ্য ব্যাকারণগত ভুল। আর মধ্যম পাঠকরা অলস সময় কাটাতে একটু পড়া শুরু করার পরই ধৈর্য হারাবেন। সুতরাং, গল্পগুলো আসলে কোন ধরনের পাঠকের উপযোগী তা বলা দুরূহ। তবু লেখক হতে চাইছে মন, কী আর করা।
প্রথমত আমি একজন মানুষ। তাই সবার মত আমারও একটি জন্মস্থান-জন্মকাল ছিল। তবে তা প্ৰকাশ-অপ্ৰকাশে গল্পের প্রাসঙ্গিকতায় কোনই গুরুত্ব তৈরি হয় না। ঠিক যেমনটা হবে না। আমার শিক্ষাগত কিংবা পেশাগত পরিচয়ে। অক্ষরজ্ঞান নেয়া ও কিছু কাগুজে সনদ সংগ্রহের প্রয়োজনে যেমন কোন প্রতিষ্ঠানে আমাকে পড়াশোনা তাগিদেও কোথাও নিযুক্ত আছি, এটাই মৌলিক সত্য। মানুষের পেশাগত কিংবা সামাজিক আইডেন্টিটি তত্ত্বে কখনোই আস্থা পাইনা। নিজেকে তাই "ফ্রি সোল’ বা ‘মুক্ত আত্মা’ পরিচয় দিতেই পরম স্বস্তি ও স্বাচ্ছন্দ্য আমার। তবে গল্প নিয়ে যে কোন কট্টর সমালোচনাকে ক্লেদাক্ত প্ৰশংসার চেয়ে অনেক বেশি মূল্যায়ন করি। সুতরাং সমালোচনার উদ্দেশ্যে চেনা-অচেনা যে কারো সঙ্গে আন্তর্জালিক যোগাযোগ হতে পারে। সার্বক্ষণিক শর্তেই।