মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি হলো ভুল করা। কিন্তু যে ব্যক্তি ভুলকে ভুল হিসেবে জানে তার জন্য তার অনুশোচনা থাকবে। হয়তো তাৎক্ষণিক, নতুবা পরে। এই অনুশোচনাই তাকে শোধরে দিতে পারে। মানুষ সাধারণত ভুল করে আবেগের বশবর্তী হয়ে, ক্ষণিকের স্বার্থ রক্ষায় ও অজ্ঞতার কারণে। আবেগ ও ক্ষণিকের রক্ষার জন্য যে ভুল হয় সে ভুলকে মানুষ ভুল হিসেবেই জানে। তাই তার সংশোধনও সহজ। কারণ আবেগ না থাকলে, আর বিবেক শাণিত হলে ক্ষণিকের স্বার্থ ত্যাগ করতে মানুষ প্রস্তুত থাকে। কিন্তু যে ভুল অজ্ঞতার কারণে সংগঠিত হয় সে ভুল হতে ততক্ষণ পর্যন্ত মুক্ত থাকা কখনই সম্ভব নয়, যতক্ষণ না উক্ত ভুলকে ভুল হিসেবে জানবে। আমাদের সমাজে অসংখ্য অসংগতি ও ভুল রয়েছে যাকে আমরা অনেকেই ভুল হিসেবে জানি না, সেটাকে সঠিক হিসেবেই জেনে আসছি এবং পালন করে আসছি। এরূপ হাজারো অসংগতি ও ভুলের মধ্যে আমরা ডুবে আছি। যে ভুলকে আমরা ভুল মনে করছি না, সংগত কারণেই উক্ত ভুলের জন্য কোন প্রকার অনুশোচনা আমাদের আসে না। তাই সে পথ থেকে ফিরে আসার চিন্তাও কেউ করে না। যা মারাত্মক ঘাতক ব্যাধি, প্রাণঘাতি ক্যান্সারের মত। নিজের অজান্তেই মহামূল্যবান ঈমানের ভিতর শিরক, কুফর ও বিদআতের বাসা বেঁধে ধীরে ধীরে পরিপুষ্ট ক্যান্সাররূপ ধারণ করে ঈমান ধ্বংস করে জাহান্নামের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিচ্ছে। ছোট ছোট অথচ ভয়ঙ্কর ভুল তথা পাপ হতে বাঁচার প্রধান উপায় হল এটা যে ভুল তা জানা। ভুলকে ভুল হিসেবে জানলে একদিন না একদিন তা শোধরানো সম্ভব। কিন্তু ভুলকে শুদ্ধ হিসেবে জেনে তা পালন করলে মধু হিসেবে বিষকে তুলে মুখে নেয়ারই নামান্তর। অজান্তে বিষপান করলেও বিষের ক্রিয়া কখনো থেমে থাকে না।