নাহিদা আশরাফীর দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ 'প্রেম নিয়ে পাখিরা যা ভাবে' প্রেম, প্রেমহীনতার দোলাচল অস্থিরতা, অনন্ত দহন, সুন্দরের জন্যে স্বপ্নময় আর্তি, অসুন্দরের প্রতি ঘৃণা, প্রতিবাদ তার কবিতায় মূল উপজীব্য হলেও সামাজিক বৈষম্য, নিপীড়িত, নিঃস্ব মানুষের প্রতি ভালোবাসা এবং অসহায় বিপন্নতার কথাও মূর্ত হতে উঠেছে তার কবিতায়। সহজ, সরল, আত্মনিষ্ঠ ভাষা, প্রকাশভঙ্গীর মাধুর্য, বিষয় অনুযায়ী ছন্দ নির্বাচন, নিয়ন্ত্রিত মগ্ন উচ্চারণ মনোযোগী পাঠকদের শুধু অবাকই করবে না, এক অনির্বচনীয় আনন্দের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেবে নিশ্চিতভাবেই। নানা প্রশ্ন এবং প্রতিপ্রশ্নের মধ্যে তার মায়াময় কলম খুঁজেছে ভালোবাসা ও প্রার্থিত প্রেমিকটিকে, অলৌকিক সমর্পণের পূর্বমুহূর্তে মন্ত্রের মতো উচ্চারিত হয় কিছু শব্দ...‘আকাশটাকে উল্টে দিতেই দিব্যি একটা ঝুড়ি হলো, যার জঠরে এক পৃথিবী প্রেম/ সাজালাম তোমার পায়ে লুটিয়ে দিতে। ঝুড়িটা কি আনতে পারি?' অথবা... ‘মেঘের পালক জলকালিতে/ আঁকে শ্রাবণ কাব্য / আর জনমে নিজেকে ঠিক/ বর্ষা জলই ভাববো'। অমোঘ অভিমানে তিনি লেখেন, “আর তোমার উপেক্ষিত হাসির বিনিময়ে/ আমি লিখে দেবো হৃদয়ের ভিটেমাটি... এমন আত্মিক, মুগ্ধতামাখানো অসংখ্য পঙক্তি ছড়িয়ে আছে তার এই কাব্যগ্রন্থে। অনুপম এক কাব্যভাষা আয়ত্ত করেছেন কবি নাহিদা আশরাফী। কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশ করার আগে দীর্ঘদিন ধরে তিনি যে শব্দ, ছন্দ, ভাষা নির্মাণের পাঠ নিয়েছেন, সাধনা করেছেন সেই অধরা মাধুরীর, তা স্পষ্ট প্রতিটি কবিতায়। কবি নাহিদা আশরাফীর মায়াবী কবিতা সমৃদ্ধ কাব্যগ্রন্থ 'প্রেম নিয়ে পাখিরা যা ভাবে' পাঠক মনের তৃষ্ণা মেটাবে এ আমার দৃঢ় বিশ্বাস। -মৃণাল বসুচৌধুরী