ঊনিশ শতকের শেষভাগে যে প্রগতিলব্ধ ফুলটির কলি প্রস্ফুটিত হয়েছিলো, একুশ শতকে এসে সেই ফুলের আরো প্রসারণ, আরো সুঘ্রাণ ছড়ানোর কথা ছিলো। কিন্তু ক্রমেই ফুলটি সংকুচিত হয়েছে, ফুলের সাবলীলতা এবং গতিময় জীবন সে পায় নি। জীর্ণতাকে উপেক্ষা করে, সংকীর্ণতাকে উপেক্ষা করে, কুসংস্কার ও সাম্রাজ্যবাদ উপেক্ষা করে বেরিয়ে এসেছিলো মানুষ। খন্ড খন্ড হয়েছে ঊপনিবেশ শাসনব্যবস্থা। জন্ম হয়েছে নতুন নতুন রাষ্ট্র, জাতি, সভ্যতা। ফলে দ্বিখন্ডিত হয়ে ধুলিসাৎ হয়েছে স্বার্থ, কপটতা ও সংকীর্ণচিত্ততা। ধারণা করা হয়েছিলো, এই বুঝি অনাচার বৈষম্য ও কূপম-কতার বিরুদ্ধে কুঠারাঘাত করে প্রকৃত অগ্রগতির উন্মেষ। মানুষের অন্তর্সত্তার স্বাতন্ত্র্য, সংস্কৃতির সুসমঞ্জস, রক্ষণশীলতার উৎসারণ, প্রাণের মুক্তি, আলোর অবাধ বিচরণ, প্রেম ও দ্রোহের সন্ধি, শ্রমের ব্যাপ্তি ও বিশালতার পূর্ণতা, অধিকারের নিশ্চয়তা, ধর্ম ও বিশ্বাসের স্বাধীনতা, সাহিত্য-কথার অবাধ বিস্তার, নারীর অধিকার ও নিরাপত্তা লাভ, পুরুষ ও নারীর মধ্যকার সহমর্মিতার বিকাশ। কিন্তু না, সম্পূর্ণভাবে সে-সব কিছুই বাস্তবায়ন করা যায় নি। যেখানে অন্তত এক চিলতে সংকীর্ণতা বাস করে, সেখানে কখনোই উদারতা প্রতিষ্ঠা পায় না। বস্তুত মানুষ স্বভাবতই পর মানুষকে স্বার্থ দিয়ে মূল্যায়ন করে। স্বার্থের ঊর্ধ্বে গিয়ে ভালোবাসা দিয়ে মূল্যায়ন করতে তেমন একটা পারে না।
অরিত্র দাস
ইতিহাস, সমাজ এবং বাস্তবতা-সচেতন প্রতিশ্রুতিশীল লেখক অরিত্র দাস। জাতীয় পটভূমি, সমসাময়িক ঘটনা বা কাহিনীর অবতারণায় জনজীবন ও সমাজ-সংস্কৃতি তাঁর রচনার মূল উপপাদ্য বিষয়। জীবনপ্রণালির প্রাত্যহিকতা থেকে বেছে নেওয়া শব্দের ব্যবহারে তিনি প্রকাশ করেন তাঁর বক্তব্যের প্রত্যক্ষতা। ২০১৯ সালের বইমেলায় প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘দীপালি’। ২০২০ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর দ্বিতীয় উপন্যাস ‘সম্পর্কের সুতোয়’। উপন্যাস দুটি পাঠক মহলে বেশ সমাদৃত হয়। ২০২১ সালে প্রকাশিত হচ্ছে তৃতীয় বই 'প্রতিক্রিয়া'। সাহিত্য চর্চার পাশাপাশি কলাম লিখেন অরিত্র দাস। প্রায় প্রতিটি জাতীয় দৈনিকে তাঁর কলাম নিয়মিত ছাপা হয়। উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে পড়াশুনা করেছেন বরিশাল অমৃত লাল দে কলেজে। সম্প্রতি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন। অরিত্র দাসের জন্ম বরিশাল জেলার গৌরনদী থানার রামনগর গ্রামে।