ফ্ল্যাপে লেখা কিছু কথা প্রাচীন ভারতের পূর্ব-প্রান্তীয় কিছু জনপদের ইতিহাস-অনুমিত জীবনালেখ্যই প্রান্ত-প্রাচীন উপন্যাসের মূল-উপজীব্য। সপ্তম শতাব্দীর ত্রিশের দশকের শেষের দিকের প্রাক-মাৎস্যন্যায় সময়টি উপন্যাস বলা চলে। এতে ইতিহাসকে আশ্রয় করা হয়েছে। ঐতিহাসিক ঘটনাবলীর অভিঘাত আছে, সে-সব অভিঘাতে জনজীবনের ওপর সৃষ্ট প্রভাবের চিত্র আছে। তবে রাজা-রাজপুরুষ-রাজদরবার বা রাজঅন্তপুরের ধারাবাহিক জীবনের বর্ণনা অনুপস্থিত। কিছু ঐতিহাসিক চরিত্র আছে যেগুলি রাজদরবারের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নয়, একমাত্র শশাঙ্ক-পুত্র মানব ছাড়া। ইতিহাসে মানবের চরিত্রটি অর্ধনিণীত। তাঁর ওপর কিছু কল্পনা আরোপ করা হয়েছে। বিশেষ করে আমাদের প্রাচীন ইতিহাসে যারা উপেক্ষিত সেই সাধারণ মানুষ, সম্ভবনাময় মানুষ, সৃজনশীল মানুষ, অনুসন্ধিৎসু-দ্রোহী মানুষই প্রান্ত-প্রাচীন-এর প্রধান অবলম্বন। মহামতি এ্যারিস্টটল বলেছেন, ‘ইতিহাসে সন তারিখ ছাড়া আর কোনো চিরন্তর মানব সত্য নেই। অন্যদিকে সাহিত্যে সন তারিখ ছাড়া সবই সত্য। এ সত্যের অর্থ সাহিত্যের সত্য, বাস্তবকে অবলম্বন করলেও বাস্তবকে অতিক্রম করে যায়।’ সাহিত্যের সত্যই এই উপন্যাসের প্রেরণার তালপুকুর।