পটল খেয়াল করেছে ছোটোখাটো বিপদাপদ সব তার ঘাড়েই আসে সবার আগে। এই যেমন ক্লাসে সবাই কথা বলছে, টিচার বলবেন, ‘এই পটল এত কথা কীসের?’
মাঠে সবাই খেলছে। হেড স্যারের রুমের টিনের চালে বল এসে পড়েছে। কোন এক টিচার বের হবেন, জোরে জোরে বলবেন, ‘এখানে এত চ্যাঁচামেচি কীসের? পটল তুই আস্তে বল মারতে পারিস না?’ অথচ পটল তখন পায়ে বলই লাগাতে পারেনি। সেদিন ছোটোচাচ্চু বলল তাদের সময়ে নাকি মোশা স্যারের ধমকের চোটে একজন ক্লাসের মধ্যেই ইয়ে করে দিয়েছিল।
পটল জিজ্ঞেস করল, ‘চাচ্চু, ইয়ে মানে কী?’
ছোটোচাচ্চু মুখ বাঁকিয়ে, ঠোঁট উলটিয়ে বলল ‘ও আমার কচি খোকারে, ইয়ে মানে বুঝো না?’ ইয়ে শব্দটির মানে যে পটল আসলেই জানে না, ছোটোচাচ্চু সেটা বুঝল না।
প্রায়ই এমন হয়। বড়োরা একদমই বুঝতে পারে না তাকে। বন্ধুরাও যে খুব একটা বুঝে সেটাও নয়। দেখা গেল পটল বলছে ‘কেল্লা ফতে,’ আর বন্ধুরা শুনল সে বলছে, ‘কল্লা ফাটে।’ শেষমেশ মাথা ফাটাফাটির জোগাড়!
এ অবস্থায় দুই বাংলা কাঁপানো পটল-কান্ডটা ঘটল কীভাবে? কার ভূমিকা বেশি? জ্ঞানী বন্ধু জসীমের? নাকি পড়ুয়া বন্ধু মোহনার? নাকি উদারমনা সাহসী শিক্ষক রমেশ স্যারের?
শাহাদাত চৌধুরী
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনায় নিয়োজিত। বিষয় রসায়নশাস্ত্র। ছিলেন বিসিএস কর্মকর্তা। ২২তম বিসিএসে সিলেট এম সি কলেজে যোগদানের মাধ্যমে শুরু করেছিলেন কর্মজীবন।
বিজ্ঞানের অধ্যাপকদের কেউ কেউ এদেশে তুমুল জনপ্রিয় লেখক হওয়ার খ্যাতি অর্জন করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় কি না কে জানে, শাহাদাত চৌধুরীর লেখা ইতিমধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। গল্প, উপন্যাস আর কবিতা লিখে চলেছেন সমানতালে। কিছু কিছু লেখা পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হলেও বই প্রকাশের অনিহা পেয়ে বসেছিলো তাঁকে। নিজের লেখাগুলো বই আকারে প্রকাশ করাকে ঝামেলাই মনে করেছেন এতদিন।
খুশির খবর হলো, যথেষ্ট শক্তিমান এই লেখক অবশেষে খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এসেছেন। কিশোর উপন্যাস ‘পটল কান্ড’র মাধ্যমে বইয়ের জগতে পা রাখলেন তিনি।
আব্দুল মান্নান চৌধুরী আর মলেদা বেগম চৌধুরীর প্রথম সন্তান শাহাদাত চৌধুরীর জন্ম ২৫ ডিসেম্বর ১৯৭৩, সিলেটে। গ্রামেই প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করে ভর্তি হয়েছিলেন সিলেট বিভাগের সে সময়ের সেরা স্কুল সরকারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে। সেখান থেকে মাধ্যমিক, এম সি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক, আর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক, ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন ।
স্ত্রী জান্নাত আরা চৌধুরী। দুই কন্যা আফশিন, আজমিন এবং একমাত্র পুত্র আহিয়ান।