খাদ্য ও পানীয়—মানুষের প্রতি আল্লাহ তাআলার অনেক বড়ো একটি নিয়ামাত। এর মাধ্যমেই আল্লাহ টিকিয়ে রেখেছেন মানুষের অস্তিত্ব। তাই তিনি অবারিত করে দিয়েছেন রিয্কের অসংখ্য পথ। জমিনকে বানিয়েছেন উর্বর। আর আসমান থেকে ব্যবস্থা করেছেন বৃষ্টির ফোয়ারা। তবে কেবল খাওয়া আর পান করার জন্যই মানুষকে সৃষ্টি করা হয়নি। জীবন বাঁচানোর জন্য এটি একটি প্রয়োজন মাত্র। কিন্তু বর্তমানে অধিকাংশ মানুষের সমগ্র সময় কেটে যায় খাওয়া, পান করা আর ভোগবিলাসিতায় মত্ত হয়ে। অর্থসম্পদ উপার্জন করাই যেন তাদের জীবনের প্রধানতম ব্যস্ততা। অধিক আহার ও অতিরিক্ত আরাম-আয়েশের ফলে বেশির ভাগ মানুষ আজ মন্দপ্রবৃত্তির কাছে পরাজিত হয়েছে। যার দরুন তারা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে আল্লাহর ইবাদাত-আনুগত্য থেকে। এই অবস্থা থেকে বের হতে হলে—অল্প খাবারে অভ্যস্ত হওয়া জরুরি।
এই বিষয়টি সামনে রেখেই পরিমিত খাদ্যগ্রহণ বইটিতে আলোচনা করা হয়েছে অল্প খাওয়ার উপকারিতা এবং অধিক আহারের ক্ষতি ও নিন্দা সম্পর্কে। এতে পরিমিত ও ভারসাম্যপূর্ণ খাদ্যগ্রহণের প্রতি উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। বর্ণনা করা হয়েছে কুরআন-হাদীস এবং সালাফদের বিভিন্ন উক্তি ও ঘটনা। নবি স্বা. ও তাঁর পরিবারের অবস্থা কেমন ছিল, তাও স্থান পেয়েছে বইটিতে। প্রিয় পাঠক! আমরা আশাবাদী—পানাহার সম্পর্কে বইটি আরও অধিক সচেতন করে তুলবে আপনাকে।
শাইখ আব্দুল মালিক আল কাসিম
ড. শাইখ আব্দুল মালিক আল-কাসিম। আরববিশ্বের খ্যাতনামা লেখক, গবেষক ও দায়ি। জন্মগ্রহণ করেছেন সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের উত্তরে অবস্থিত ‘বীর’ নগরীতে বিখ্যাত আসিম বংশের কাসিম গােত্রে। তার দাদা শাইখ আব্দুর রহমান বিন মুহাম্মাদ বিন কাসিম আল-আসিমি আন-নাজদি রহ. ছিলেন হাম্বলি মাজহাবের প্রখ্যাত ফকিহ। তাঁর পিতা শাইখ মুহাম্মাদ বিন আব্দুর রহমান রহ.ও ছিলেন আরবের যশস্বী আলিম ও বহু গ্রন্থপ্রণেতা। শাইখ আব্দুল মালিক আল-কাসিম জন্মসূত্রেই পেয়েছিলেন প্রখর মেধা, তীক্ষ প্রতিভা আর ইলম অর্জনের অদম্য স্পৃহা। পরিবারের ইলমি পরিবেশে নিখুঁত তত্ত্বাবধানে বেড়ে উঠেছেন খ্যাতনামা এই লেখক। আনুষ্ঠানিক পড়াশােনা শেষ করে আত্মনিয়ােগ করেন। লেখালেখিতে গড়ে তােলেন ‘দারুল কাসিম লিন নাশরি ওয়াত তাওজি’ নামের এক প্রকাশনা সংস্থা। প্রচারবিমুখ এই শাইখ একে একে উম্মাহকে উপহার দেন সত্তরটিরও অধিক অমূল্য গ্রন্থ। আত্মশুদ্ধিবিষয়ক তেইশটি মূল্যবান বইয়ের সম্মিলনে পাঁচ ভলিউমে প্রকাশিত তাঁর ‘আইনা নানু মিন হা-উলায়ি নামের সিরিজটি পড়ে উপকৃত হয়েছে লাখাে মানুষ। বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে এই সিরিজের অনেকগুলাে বই। আজ-জামানুল কাদিম’ নামে তিন খণ্ডে প্রকাশিত তাঁর বিখ্যাত গল্প-সংকলনটিও আরববিশ্বে বেশ জনপ্রিয়। সাধারণ মানুষের জন্য তিনি প্রাঞ্জল ভাষায় ছয় খণ্ডে রচনা করেছেন রিয়াজুস সালিহিনের চমৎকার একটি ব্যাখ্যাগ্রন্থ। এ ছাড়াও তাঁর কুরআন শরিফের শেষ পারার তাফসিরটিও বেশ সমাদৃত হয়েছে। আমরা আল্লাহর দরবারে শাইখের দীর্ঘ কর্মময় জীবন কামনা করি।