প্রেম-নারী অবারিত জীবনের নান্দনিক উপাদান। চাঞ্চল্যকর শৈশব সেই জীবনের প্রেরণা। তারুণ্যদীপ্ত যৌবন দ্রোহের আধার। প্রকৃতির প্রেমে নদীর মোহনায় পেয়ে যায় জীবনের ষোলকলা পূর্ণতা, নিনাদিত ভালোবাসা । প্রেম-ভালোবাসায় আচ্ছাদিত জীবনে আত্মপরিচয়ে বলিয়ান হতে প্রয়োজন জাতিস্বর। ইতিহাসের হীরকখণ্ড। জাতীয় জীবনের প্রেরণাময় কণ্ঠস্বর। এতেই জীবনের স্বার্থকতা। না পাওয়ার বেদনা-ই প্রেম। না পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা বুকে চেপে প্রেমের জয়গান করা-ই ভালোবাসা। পৃথিবীর তাবৎ প্রমাখ্যান পড়ে অন্তত তাই-ই মনে হয়। বিরহের সুর-ই প্রেমের কোকিল। দগ্ধ হৃদয় ভালোবাসার দলিল। আর সবকিছু ছাপিয়ে যায় তখনই যখন কাউকে কাছে পাবো না জেনেও অপেক্ষা করা। তবুও বলতে হয় বিচিত্র জীবনের বিচিত্র অনুভূতি। ভিন্ন তার ভালোবাসার সংজ্ঞা। “পদ্মজলের সিঁড়ি” প্রেমিক হৃদয়ের দীর্ঘশ্বাসের শৈল্পিক প্রকাশ। জীবনঘনিষ্ট শব্দের দ্যোতনায় এঁকেছে “বেদনা আর দুঃখের অশ্রু”। জোছনায় রোমন্থন করে স্মৃতি আর কামনার কথা ব্যক্ত করে- “পূর্ণ যৌবনবতী চাঁদের আলোয় তোমাকে চেয়েছি নির্জনে, নির্ভরতায়”। কারণ “বাধাহীন কল্পনার ভাবনাগুলো” সবসময় প্রিয়াত্মাকে কাছে-ই চায়। অপেক্ষা শেষ হয় না কবির। “অন্তহীন অপেক্ষা”। “ভালোবাসার অভিমান” ভেঙে একদিন ফিরে আসবেই। তৃষিত হৃদয় ভরে যাবে সমানুপাতিক ভালোবাসায়। বিরহের গলিপথে হাঁটতে হাঁটতে কবি একসময় ঘুরে আসে “বর্ষণস্নাত দিনটি”। “ইচ্ছে করে” একটু স্বাভাবিক হতে। তাই তো কবি এখানে গেয়েছে ছোটোবেলার জয়গান। “সতেরো”র দুঃসহ বিবর্তন। সমসাময়িক প্রেক্ষাপট বিবেচনাপূর্বক প্রার্থনা করেছে “তেজোদীপ্ত মার্চ আবার আসুক”। “প্রত্যাবর্তন”-এ উদ্বেলিত মুক্তি প্রত্যাশী হৃদয়। গেয়েছে বিজয়ের গান। আছে স্যাটেয়ার। সর্বোপরি কবিতার কথা বলেছে “কবিতার মানসচিত্র”-এ। দুর্বোধ্য শব্দের জটিল ভাষার মারপ্যাঁচ থেকে বেরিয়ে এসে কবি চেনা আর সহজ শব্দের মিশেলে গড়ে তুলেছে “পদ্মজলের সিঁড়ি”র ক্যানভাস। যেখানে খুঁজে পাওয়া যাবে একজন প্রেমিককে। যে কিনা নারী প্রেমের দোলায় চড়ে চষে বেড়িয়েছে ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল। আশা করছি সময়ের নির্মোহ মূল্যায়নে কবি এবং কবিতার যাত্রা হবে মহাকালের পথে।