শিশুরা গল্প পাগল। তারা গল্প শুনতে শুনতে শেখে এবং গল্প শুনতে শুনতে ঘুমোয়। গল্পের মাধ্যমে তারা তাদের চারপাশকে চিনতে এবং বুঝতে শুরু করে। যেকোনো ঘটনাকে যদি গল্প আকারে শিশুদের শোনানো বা পড়ানো হয়, তাদের মস্তিষ্ক সেটা দীর্ঘ সময় পর্যন্ত সংরক্ষণ করে রাখে।
কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, শিশুদের গল্পের দুনিয়াটা রাক্ষস খোক্কস আর ভূত-প্রেতের গল্প দিয়ে ভরপুর। সেসব গল্পে না থাকে শেখার কোনো উপাদান, আর না থাকে তার বিশ্বাস নির্মাণের কোনো উপকরণ।উপরন্তু সেসব গল্প তাদেরকে ভীতু এবং আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠতে প্রবঞ্চনা দেয়।
শাশ্বত জীবনবিধান ইসলামের রয়েছে সোনালি সব ইতিহাস। কুরআনের পাতায় পাতায়, হাদিসের পরতে পরতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে শিশুদের জন্য নির্মাণ-উপযোগি সব গল্পের উপকরণ। একটা শিশুকে বিশ্বাসে বলীয়ান, কর্মে উদ্দীপ্ত এবং সত্যিকারের মুসলিম হিসেবে গড়ে তুলতে সেসব উপকরণ থেকে তুলে আনা যায় গল্পের নানান রসদ। শিশুদের উপযোগি করে যদি সেগুলোকে উপস্থাপন করা যায় তাদের সামনে, তাহলে সেই প্রজন্মকে নিয়ে আশাবাদী হওয়া যায় বৈকি।
কুরআন, হাদিস আর সোনালি ইতিহাসের পাতা চষে, শিশুদের জন্য আমরা তৈরি করছি এমনকিছু কাজ যা তাদের মন আর মননকে নির্মাণ করবে বিশ্বাসের অনুপম শুদ্ধতায়। তারা এমনকিছু শিখবে যা তাদের অন্তকরণে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা, তাঁর দ্বীন এবং তাঁর নবি রাসূলদের জন্য তৈরি করবে ভালোবাসার সমুদ্র, ইনশা আল্লাহ। রাক্ষস-খোক্কসের গল্প নয়, আমাদের শিশুরা বড় হবে বুনিয়াদি ইসলামকে হৃদয়-মননে ধারণ করতে করতে, ইনশা আল্লাহ।
বিছানায় শুয়ে, বাবা-মা’র মুখে শিশুরা যে ভঙ্গিমায় গল্প শোনে, ঠিক সেই ভঙ্গিমায় তৈরি করা হয়েছে ‘পবিত্র তিন মসজিদের গল্প’ সিরিজ। বাইতুল্লাহ, মাসজিদ আন নববী এবং বাইতুল মাকদিসের আদিম ইতিহাস থেকে শুরু করে, বর্তমান কালের সময়টাকেও গল্পে নিয়ে আসার চেষ্টা করা হয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ।
আর, আমাদের সোনামণিদের জন্য চমৎকার এই গল্পগুলো তৈরি করেছেন তাদের আরিফ আজাদ চাচ্চু। লেখক আরিফ আজাদের লেখা শিশুদের জন্য প্রথম মৌলিক কাজ হতে যাচ্ছে এটি। সুকুন পাবলিশিং এই কাজ দায়িত্ব নিয়ে ছোট্ট পাঠকবন্ধুদের হাতে তুলে দেবে, ইনশা আল্লাহ।
আমাদের এই সিরিজের অন্যতম আকর্ষণীয় বিষয় হবে গল্পের সাথে থাকা ছবিগুলো। প্রাসঙ্গিক এই ছবিগুলো আমরা ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ করে বইতে ব্যবহার করছি না, বরং প্রতিটা ছবিই আমরা আঁকাচ্ছি দক্ষ শিল্পী দিয়ে।
গল্পের প্রতিটা অংশের জন্য লম্বা সময় ব্যয় করে আমরা ‘থিম’ নির্ধারণ করেছি এবং শিল্পীকে দিয়ে সেই থিম ধরে ধরে ছবিগুলো আঁকানো হচ্ছে। এর পেছনে ব্যয় হচ্ছে আমাদের শত শত ঘণ্টা। বইতে ব্যবহৃত প্রতিটা ছবিই হবে আমাদের একান্ত নিজস্ব। ইন্টারনেট দুনিয়ার কোথাও সেই ছবিগুলো খুঁজে পাওয়া যাবে না।
আমরা খুব আশাবাদী যে, আমাদের সোনামণিদের হাতে খুব চমৎকার একটা কাজ আমরা তুলে দিতে পারবো, ইনশা আল্লাহ। গল্পে গল্পে আমাদের সোণামণিরা ভ্রমণ করে আসবে সুপ্রাচীন অতীত থেকে। পরিচিত হবে অনেক নবি রাসূল আর সাহাবাদের মতো সোনার মানুষদের সাথেও। মহান রবই একমাত্র তাউফিকদাতা।