পিদিম নিয়ে কিছু কথা :
প্রকাশনা জগতে আসার পর থেকেই ইচ্ছে ছিল একটি সাহিত্য-ম্যাগাজিন প্রকাশ করার, কিন্তু এমন একটি আয়োজনের জন্যে আর্থিক সক্ষমতার চেয়ে বেশি দরকার পড়ে একদল সাহিত্যপ্রেমী প্রাণবন্ত তরুণ-তরুণীর।
কোভিড মহামারির সময়গুলোতে দৃঢ়প্রতীজ্ঞ হয়েছিলাম, দুঃসময় কেটে গেলে একটি সাহিত্য-ম্যাগাজিন বের করবো। অবশেষে একদল তরুণ সাহিত্যপ্রমীর আগ্রহ, পরিশ্রম আর একাগ্রতার কারণে সম্ভব হয়েছে এই ‘ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো’র মতো কাজটি করার।
অন্যান্য ছোটকাগজের চেয়ে ‘পিদিম’ কি আলাদা?--এ প্রশ্নের জবাবে বলবো, আলাদা আর ভিন্ন কিছু করার চেয়ে নিজেদের মতো কিছু করার দিকেই আমাদের ঝোঁক বেশি। ‘পিদিম’ পাঠক আর সাহিত্যামোদীদের একটি ম্যাগাজিন। নবীণ এবং আড়ালে থাকা লেখকদের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে। শব্দসংখ্যার সীমাবদ্ধতা কিংবা নির্দিষ্ট বিষয়-বস্তুর রক্ষণশীল ঘেরাটোপেও আবদ্ধ থাকবে না। সাহিত্য জগতে যে গোড়ামী-রক্ষণশীলতা আর সঙ্কীর্ণমনতার অন্ধকার ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে, ‘পিদিম’ কিছুটা হলেও সেখানে আলো ছড়ানোর চেষ্টা করবে, নতুন ঐতিহ্য নির্মাণে ভূমিকা রাখবে। এখানে ‘সিরিয়াস’ লেখার পাশাপাশি একই কাতারে থাকবে ‘চটুল’ কিংবা ‘হালকা’ মেজাজের লেখা! ‘পপ-কালচার’ আর মাঙ্গা-কমিক্স থেকে শুরু করে হালের ওটিটি প্ল্যাটফর্মের কন্টেন্টও থাকবে। সঙ্গত কারণেই থাকবে থৃলার, তথা রহস্য-রোমাঞ্চ বিষয়-বস্তুও--যেহেতু প্রথাগতভাবে সাহিত্য-পত্রিকাগুলোতে এই জনরার অনুপ্রবেশ নেই।
মুক্ত-স্বাধীন পথে হাঁটার জন্য প্রথম সংখ্যায় কোনো প্রকার বিজ্ঞাপন রাখা হয়নি। কেবলমাত্র বাতিঘরের নিজস্ব বইয়ের বিজ্ঞাপন আর দুটো অনলাইন বুকসেলারের বিজ্ঞাপন দেয়া হয়েছে সৌজন্যতাবশত। তাই বলে বাস্তবতাবিবর্জিত ধারণা নিয়ে এগোচ্ছি না। ‘পিদিম’-এর তেল মূলত সরবরাহ করবে ‘বাতিঘর’! বছরে ৪টি সংখ্যা বের করার দায়ভার এই প্রতিষ্ঠানের উপরে ন্যস্ত। প্রথম সংখ্যা বেরুনোর পর কেউ যদি আমাদের স্বাধীন এবং উদারপন্থী অবস্থানকে অক্ষুন্ন রেখে বিজ্ঞাপন দিতে ইচ্ছুক হয়, আন্তরিকভাবেই স্বাগত জানানো হবে।
স্বাগত জানানো হবে নতুন লেখক আর তাদের কষ্টসাধ্য লেখাকে। যেকোনো দেশের যেকোনো বয়সি মানুষ বাংলাভাষায় লেখা পাঠাতে পারবেন পিদিম-এ। আমরা যথাসম্ভব তাদের লেখা মূল্যায়ণ করার চেষ্টা করবো। কিছু কিছু লেখায় সমস্যা থাকলে সেগুলো ‘মেরামত’ করার চেষ্টা করা হবে; কিছু লেখা আবার স্থানসঙ্কুলানের অভাবে প্রকাশ করা হবে পরবর্তি সংখ্যায়; আর স্বাভাবিক নিয়মেই বিরাটসংখ্যক লেখা মনোনীত হবে না। যাদের লেখা মনোনীত হবে না তাদের উচিত হবে আমাদের মূল্যায়নকে প্রশ্নবিদ্ধ না করে নিজের লেখার দিকে মনোযোগ দেয়া--যদিও পিদিম-টিমের মূল্যায়নও শতভাগ সঠিক হবে না।
সাম্প্রতিক কালের একটি ফেনোমেনা’কে ধরে রাখার উদ্দেশ্যে পিদিম-এর প্রথম সংখ্যায় সবগুলো ছোটগল্পে ব্যবহার করা হয়েছে ‘মিডজার্নি’র সৃষ্ট ইমেজগুলো। আর এর প্রচ্ছদে ব্যবহার করনা হয়েছে চিত্রশিল্পী তানিয়া সুলতানার লাইফ ইন অ্যা বাজার শিরোনামের একটি অয়েল-পেইন্টিং। কেবলমাত্র অসধারণ অঙ্কন আর সৌন্দর্যের কারণে নয়, বরং উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবেই এটা করা হয়েছে। বাজারের মতো একটি আর্থ-সামাজিক-সাংস্কতির অতীব জরুরি চালিকা শক্তিকে নিয়ে বাঙালি সমাজ সঙ্কটে ভোগে। বাঙালির চিন্তা-চেতনায় যে অরওয়েলের ডিসটোপিয়ান ডাবল-থিঙ্কিং বিরাজমান, তারই সরল প্রকাশ ঘটে বাজারের প্রতি হীন দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশের মধ্য দিয়ে। পিদিম-এর দ্বিতীয় সংখ্যায় বাঙালির এই ‘বাজার-সঙ্কট’কে নিয়ে একটি ক্রিটিক্যাল আলাপ থাকবে। যে কেউ এ নিয়ে মনোজ্ঞ এবং বিশ্লেষণধর্মী লেখা পাঠালে সাদরে গ্রহণ করা হবে।
‘পিদিম’-এ আমরা প্রতিটি কন্টেন্টকে (গল্প-কবিতা-প্রবন্ধ-রিভিউ) একেকটা পিদিম বলেই ধরে নেবো, অভিহিত করবো। সব শেষে পিদিম-এর সকল লেখক এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি এমন একটি প্রচেষ্টা বাস্তবায়নে সাহায্য করার জন্য। সবাই ভালো থাকবেন, পিদিম-এর সঙ্গে থাকবেন।
মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন
আপনি নিশ্চয়ই মুসকান জুবেরির নাম শুনেছেন কিংবা জানেন 'রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি'! ভারত ও বাংলাদেশে তুমুল জনপ্রিয় থ্রিলার লেখক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন।
Goodreads পাঠকরা প্রচুর পরিমানে এই বইয়ের রিভিউ দিয়েছেন, মন্তব্য জানিয়েনয়েন।
Salima Akhtar Nabila নামের একজন লিখেছেন '
বইটা পড়েই লেখকের প্রতি মুগ্ধতার শুরু, মুসকান জুবেরির রহস্যময়তা প্রচন্ড আকর্ষণীয়, সেই সাথে পটভূমি বাছাই ও পুরো গল্পের আবর্তন ছিল মনোমুগ্ধকর, আমার পড়া অনন্যসাধারণ বাংলা থ্রিলার এটি, loved it.
Anamul Haque লিখেছেন,
'বাংলাদেশি এযুগের থ্রিলার এমন দুর্দান্ত হতে পারে, ধারণা করি নি। প্রত্যেক অধ্যায়ের শেষে লেখক আকর্ষণ রেখেছেন তৎজলদি পরবর্তী অধ্যায় পড়ে ফেলার জন্য। কিছু কিছু জায়গায় হতাশ হয়েছি বটে, তবে ৫ এ ৫ না দিলে অসম্মান হবে।'
মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন বাংলাদেশী লেখক ও প্রকাশক। লেখালেখির প্রথমদিকে তিনি বেশকিছু জনপ্রিয় ইংরেজি উপন্যাস অনুবাদ করেন ফেলেন এবং পরবর্তীতে মৌলিক লেখালেখি শুরু করেন। আর এই মৌলিক থৃলার এবং অনুবাদগুলো তাকে বাংলাদেশ সহ ভারতেও তুমুল জনপ্রিয় লেখক হিসেবে পরিচিত করে তুলেছেন।মূলত ২৬টিরও বেশি বইয়ের এ অনুবাদক পরবর্তীতে মনোনিবেশ করেন মৌলিক থ্রিলার রচনায়।
তিনি ঢাকায় জন্মগ্রহন করেছেন,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে (১বছর) পড়াশোনার পরে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ (স্নাতকোত্তর) করেন এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।
মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন প্রচুর লিখে চলেছেন। ভক্তকুল ভালোবেসে তাকে কিং অব থৃলার উপাধি দিয়েছেন।
কুইজ: সৃজিত পরিচালিত 'রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি' এর মুসকান জুবেরি চরিত্রে অভিনয় করেন কোন অভিনেত্রী?