ফিজিকস অব দ্য ইমপসিবল
তাত্ত্বিক পদার্থবিদ মিচিও কাকুর মতে, অসম্ভব ব্যাপারটা আপেক্ষিক। আজ যা অসম্ভব, কাল সেটা সম্ভব হয়ে উঠতে পারে। আজকের অনেক প্রযুক্তিকে শতবর্ষ আগের বিশ্বে নিশ্চয় অসম্ভব কিংবা ম্যাজিক বলে মনে হতাে। আমরাও একই অবস্থায় পড়ি বিজ্ঞান কল্পকাহিনি-নির্ভর বই পড়তে বা সিনেমা দেখতে গিয়ে। স্টার ট্রেক, স্টার ওয়ার্স কিংবা আইজাক আসিমভ ও আর্থার সি ক্লার্কের বই বা সিনেমায় দেখানাে ভবিষ্যতের ঝা-চকচকে অনেক প্রযুক্তি আমাদের চোখ ধাঁধিয়ে দেয়। কিন্তু সেগুলাে কি বাস্তবে আদৌ সম্ভব? এ ব্যাপারে আধুনিক বিজ্ঞান কী বলে? এসব প্রশ্নের বিজ্ঞানভিত্তিক উত্তর পাওয়া যাবে মিচিও কাকুর ফিজিকস অব দ্য ইমপসিবল বইতে। টাইম ট্রাভেল, টেলিপাের্টেশন, ওয়ার্মহােল, স্টারশিপ, এলিয়েন, অদৃশ্য হওয়ার ক্ষমতা, ফোর্স ফিল্ড, ফেজার, নক্ষত্র থেকে নক্ষত্রে ভ্রমণসহ ভবিষ্যতের আরও কিছু প্রযুক্তি বর্তমানে তুমুল আলােচিত। অনেক আধুনিক বিজ্ঞানী এগুলাে অসম্ভব ও গাঁজাখুরি বলে রায় দিয়েছেন। তবে সেগুলােকে মােটাদাগে অসম্ভব বলতে নারাজ মিচিও কাকু। এসব প্রযুক্তি সম্ভব নাকি অসম্ভব, বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব, তথ্য ও যুক্তিতর্ক দিয়ে এ বইয়ে তার চুলচেরা বিশ্লেষণ করেছেন তিনি। প্রতিটি বিষয় অধ্যায়ভিত্তিক আলোচনা করেছেন। স্টিফেন হকিংয়ের থিওরি অব এভরিথিং'ই পদার্থবিজ্ঞানের সকল প্রশ্নের উত্তর নয়। এমন অনেক জিনিস আছে যা পদার্থ বিজ্ঞান পৌঁছাতে সক্ষম হয়নি। নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী স্টিভ ওয়েনবার্গ আমাদের থিওরি অব এভরিথিংয়ের অন্বেষাকে উত্তর মেরুতে অভিযান চালানোর সঙ্গে তুলনা করেছেন। কয়েক শতাব্দী ধরে প্রাচীন নাবিকেরা মানচিত্র নিয়ে কাজ করেছেন, কিন্তু তাতে উত্তর মেরু অনুপস্থিত ছিল। কম্পাসের সব কাঁটা ও চার্ট হারিয়ে যাওয়া অংশের দিকে তাক করা। তারপরও কেউ সেই জায়গায় যায়নি। ঠিক একই ভাবে পদার্থবিজ্ঞানের সব গবেষণা থিওরি অব এভরিথিং এর দিকে মুখ করা৷ কিন্তু মিচিও কাকু এই বইটিতে পাঠককে সেই না যাওয়া জায়গায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। পদার্থবিজ্ঞানের নতুন কিছু সম্ভাবনার সাথে পরিচয় করে দিয়েছেন। এক কথায় অসাধারণ একটি বই। বইটি বিজ্ঞান প্রেমীদের জন্য একটি এ্যডভেঞ্চারই বটে।