জয়ন্ত দে একজন মায়াবী কথাকার। হয়ত বা মায়ার আবরণেই তিনি পাঠককে বেঁধে রাখার কৌশল আবিষ্কার করেন। সেখানে যুক্ত হয়ে যায় এক অপরূপ গদ্যভাষা। আবার প্রয়োজনে জাদুবাস্তবতারও আশ্রয় নেন। তাই ‘পেণ্ডুলাম’, ‘আজিবলাল ও সুন্দরী’-র মত গল্প অন্য মাত্রা পায়। কিন্তু এই মায়ার অন্তরালে অন্তঃশীলা থাকে চাপা নিষ্ঠুরতা। একটি ঘড়ির গল্প কীভাবে যেন সাম্প্রদায়িক হিংসার উৎসমুখ খুলে দেয় চুপিসাড়ে, আমরা বুঝতেও পারি না। কখন আধুনিক দেবদাস হাতে তুলে নেয় হন্তারক ছুরি, তা আমাদের অজ্ঞাত থেকে যায়। অপরিদৃষ্ট মানববৃত্তির জলছবি আঁকতে আঁকতে জয়ন্ত দে আসলে মানবিকতার পলেস্তারা খসিয়ে দেন এক লহমায়, মানবমনের গূঢ়তলচারী বিকারকে তাঁর লিখনবিশ্ব করে তোলেন। মানুষ ও সমাজের সেই আশ্চর্য যৌক্তিক বিপর্যয় তার সমস্ত ট্র্যাজেডি নিয়ে পাঠকের সামনে।