ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ ঐতিহাসিকাল থেকেই মানুষ অনেক প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও অজানাকে জানার জন্য দেশবিদেশে ভ্রমণ করে আসছে। এখন এ সুযোগ অনেক প্রসারিত এবং সহজ। ভ্রমণ করাটা বেশ আনন্দদায়ক, কিন্তু এ বিষয়ে যখন লিখতে হয় তখন অতটা আনন্দচিত্তে লেখা সম্ভব হয়ে ওঠেনা। ভ্রমণের সময় অনেক সময়ই সাথে গাইড থাকেন বা রাখতে হয়, যিনি দর্শনীয় স্থাপনা দেখানোর সময় ছোট শিশুদের ছড়া আবৃত্তির মতো করে দর্শনীয় স্থাপনার ধারাবাহিক বর্ণনা দিয়ে থাকেন। এ সমস্ত ধারা বিবরণীর উপর আস্থা রেখে যেমন কোনোকিছু লেখা যায় না, তেমনি অত সংক্ষিপ্ত বর্ণনার উপর ভিত্তি করে কোন পুস্তক রচনাও সম্ভব রচনাও সম্ভব হয়ে ওঠে না। যে কারণে ভ্রমণ বিষয়ক লেখা লিখতে হলে তথ্য হাওলাত করা আবশ্যক হয়ে পড়ে। আমাকেও এ ভ্রমণ কাহিনী লিখতে গিয়ে প্রত্যক্ষণ-লব্ধ জ্ঞান ছাড়াও বিভিন্ন সেকেন্ডারি উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে হয়েছে। যেহেতু এটি কোনো গবেষণা গ্রন্থ নয়। সেহেতু ফুটনোট আকারে তথ্য উৎস প্রদান অনাবশ্যক মনে করে তা সচেতনভাবেই পরিহার করেছি।
ভ্রমণের অভিজ্ঞতা লিখতে লিখতে প্রসঙ্গক্রমে অদর্শনীয় অনেক কিছুই অবতারনা করেছি। অনেক সময় প্রয়োজনের নিরিখে ইতিহাসের পাতা থেকেও অনেক কথা তুলে এনেছি। কখনো কখনো একান্ত ব্যক্তিগত অবিজ্ঞতার আলোকেও কিছু বলেছি। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রে বিষয়ভিত্তিক ঘটনাপ্রবাহ , সামাজিক ব্যবস্থা, অর্থনৈতিক ব্যবস্থা বিস্তারিত ভাবে বলছি। বাকিংহাম প্যালেসের সামনে দাঁড়িয়েূ মনে পড়েছে সে দেশের রাজতন্ত্রের ক্রমবিকাশের কথা ,মনে পড়েছে আমাদের ভাগ্যবিড়ম্বিত নবাব, বাদশাহ, রাজাদের কথা। এসব কথা বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করতে গিয়ে আমাদের রাজতন্ত্রের বেদনাদায়ক অধ্যায় যেমন তুলে ধরেছি, তেমনি ইতিহাস ঘেঁটে তুলে এনেছি ব্রিটেনের রাজতন্ত্রের ক্রমবিকাশের বর্ণিল দিক। এক্ষেত্রে ক্ষেত্র বিশেষে কিছু কিছু অধ্যায় ও বিষয়বস্তু নিবন্ধ, প্রবন্ধের আকার ধারণ করেছে বলে মনে হয়েছে। যে সমস্ত নাম প্রসঙ্গক্রমে বর্ণনা করেছি সে ক্ষেত্রেও অনেক সময় সচেতনভাবেই বিকল্প পন্থা অবলম্বন করতে হয়েছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর -এর লিখিত ভ্রমণকাহিনীর মতো নামের অদ্যাক্ষর ব্যবহার না পুরো নামটিই বদলে দিয়েছি। এজন্য অবশ্য ঘটনা-বর্ণনায় কোনো বিচ্যুতি ঘটেনি ।
সূচিপত্র শুরুতে প্যারিস পেরিয়ে বিলেতে * প্যারিসে পাতালপুরী এবং বাংলার বাউল * আইফেল টাওয়ার * সেইন নদীতে নৌবিহার * মোনালিসা * গুডবাই প্যারিস * বিলেতের পথে * ব্রাডফোর্ডের পথে * পার্ক পেরিয়ে পথে * ইয়র্কের গলির পথে * ব্রিটেনে ধুমপান এবং * ব্রিটেনর রাজতন্ত্র * ব্রিটেনের মতো আমাদেরও রাজা ছিল * অতঃপর প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য
মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক
লালমনিরহাট মিশন স্কুল, আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি কলেজ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানে অধ্যয়ন। পৈতৃক বাড়ি লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জে বাবা মরহুম আব্দুল ওয়াদূদ ভূঞা মা রাজিয়া সুলতানা। পাঁচ ভাই এক বােন। স্ত্রী জেসমীন আরা ও তিন কন্যা পূর্ণা, অরণ্যা, পৌষী রাজকন্যাকে নিয়ে পারিবারিক জীবন পেশা সরকারি চাকরি। লেখার ক্ষেত্র: মুক্তিযুদ্ধ, গণহত্যা, পরিবেশ, ভ্রমণ, অনুবাদ, গবেষণা, প্রবন্ধ ও ছড়া-কবিতা। ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে প্রায় ৬০টি গ্রন্থ। উল্লেখযােগ্য গ্রন্থঃ মুক্তিযুদ্ধ: '৭১-এর অল্পকথা, উত্তরের গণহত্যা, যুদ্ধজীবন, কথা ৭১, একাত্তরের বীরেন স্যার, একটি পতাকা, ছড়া কবিতায় একুশ একাত্তর, ১৯৭১-বিদেশি গণমাধ্যমে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ, জনকের প্রতিবাদী জীবন, রেলওয়েতে মুক্তিযুদ্ধ ও গণহত্যা।। প্রবন্ধ ও অনুবাদ: কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র, এবং কৌটিল্যের নীতিশাস্ত্র, চাণক্যের কূটকৌশল, ফ্রম থার্ড ওয়ার্ল্ড টু ফাস্ট (লী কুয়ান ইউ-এর আত্মজীবনী)। পরিবেশ: বাংলাদেশের নদ নদী, পৃথিবীর পরিবেশ, অরণ্যাদের শ্যামল গাও, ছড়ায় ছড়ায় পরিবেশ। ভ্রমণ: দেশের নাম ভিয়েতনাম, স্বর্গরাজ্য সিঙ্গাপুর, প্যারিসের পথে পথে, এবং ব্রিটেনের রাজতন্ত্র, প্যারিস পেরিয়ে বিলেত। কবিতা-ছড়া: বদ্বীপের বেদনা, তাই যদি হবে, সূর্যহীন। তাপের ছায়ায়, অন্তর্ভাজে লুকোচুরি, বিশুদ্ধ স্নান, শত কবিতা, ঘুমকে ঘুমাতে দাও।