অত্যাচারিতের শিক্ষা শুধুমাত্র চিন্তাভাবনা আর লেখাপড়ার ফসল নয়। এর শেকড় বাস্তব অবস্থার গভীরে প্রোথিত। শিক্ষামূলক কার্যক্রমে যে-সব শ্রমিক (কৃষক ও শহুরে শ্রমিক) ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির লোকজনকে আমি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে পর্যবেক্ষণ করেছি তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত হয়েছে এই বইটিতে। প্রাথমিকভাবে এই বইটিতে যে সকল বিষয় তুলে ধরা হয়েছে সেগুলোকে ভবিষ্যতে আরও গভীরভাবে বিশ্লেষণ করার আশা রাখছি। পরবর্তী সময়ে হয়ত-বা কিছু কিছু বক্তব্য পরিমার্জন করতে হতে পারে, কিছু কিছু বক্তব্য হয়ত-বা আরও সুপ্রতিষ্ঠিত হতে পারে।’
এই বই কিছু পাঠকের কাছে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করতে পারে। কেউ কেউ হয়ত মানবমুক্তির ধ্যানধারণার ক্ষেত্রে আমাকে পুরোপুরি ভাববাদী ঠাওরাবেন। কিছু বিষয়―যেমন, তত্ত্ববিদ্যা, প্রেম, সংলাপ, আশা, বিনয় এবং সহানুভূতি সম্পর্কিত আলোচনা হাস্যকর প্রতিক্রিয়াশীল বিষয় হিসেবেও প্রতিভাত হতে পারে। কেউ কেউ আছেন যাঁরা অন্যায়-অবিচার হতে সুবিধা ভোগ করেন; তাঁরা হয়ত-বা এই অগ্রাহ্যতাকে মেনে নেবেন না, বা নিতে চাইবেন না। তাই এই প্রাথমিক লিখাটি তাঁদেরই উদ্দেশ্যে যাঁরা নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে আমূল সংস্কারের পক্ষপাতী। আমি নিশ্চিত যে, মার্ক্সবাদী ও খ্রিস্টানগণ পুরোপুরি বা অংশত আমার সাথে দ্বিমত পোষণ করলেও পুরো বইটিই পড়বেন। আবার, যে-পাঠক বদ্ধমূল ধারণার বশবর্তী হয়ে একটি ‘অযৌক্তিক’ অবস্থানে নিজেকে ধরে রাখতে চান তাঁকেও এই বই একটি সংলাপে প্রবৃত্ত করবে বলে আশা করছি।