"রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তাহীনতা থেকেই প্রয়োজন হয় সামরিক জোটের। উদ্ভব হয় কোনও বড় দাদার, যে আবার নিয়ন্ত্রণের ধারণাটি খুব ভাল বোঝে।
বিভাস বাবুর বইটির পরতে পরতে উঠে এসেছে যে দর্শন, তার নির্যাস এটাই যে, একটি জয়ের মধ্যে অবশ্যম্ভাবী একটি পরাজয় জড়িয়ে থাকে।
অস্ত্র জিতে গেলে, মনুষ্যত্ব হেরে যায়।
পরমাণু বিস্ফোরণের দ্বারা যুদ্ধে নৃশংস এক জয় সুনিশ্চিত হয় বটে, তবে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে হেরে যায় সভ্যতা।
ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে চুরমার হয়ে যাওয়া বাড়ির কাছে দাঁড়িয়ে থাকা ক্ষতবিক্ষত নাগরিকের চোখে চোখ রাখার ক্ষমতা হারায় বিজ্ঞান, যুক্তি!
এভাবেই চক্রাকারে চলতে থাকে ইতিহাসের চাকা।
পরিশেষে এটুকুই বলার: এই বই অন্তত দশটি বছর আগে আমাদের হাতে আসলে আমাদের প্রচুর শ্রম বাঁচতো।
যে অভূতপূর্ব রেফারেন্সিং এবং ইন্টার-টেক্সচুয়াল অবসার্ভেশন-হাইপোথিসিস-ইনফারেন্স খাড়া করেছেন লেখক, তা এই বইকে নিয়ে গিয়েছে এনসাইক্লোপিডিয়া বা বিশ্বকোষের লেভেলে।
লেখককে কুর্নিশ। কুর্নিশ প্রকাশককেও।
সভ্যতার উত্তরণের সাথে সাথে উন্নত হয়েছে মানুষের অস্ত্র। নিজেকে রক্ষা করতে, অন্য দেশ অধিকার করতে, সভ্যাতার আলো এক দেশ থেকে অন্য দেশে ছড়িয়ে দিতে একের পর এক নতুন নতুন অস্ত্রের আবিষ্কার হয়েছে। পরিযায়ী মানুষ শুধুমাত্র তার ভাষা, খাদ্য সংস্কৃতি, বিজ্ঞান, সাহিত্য নিয়েই এক দেশ থেকে অন্য দেশে যায় নি, সাথে নিয়ে গেছে অস্ত্র আর তার ধাতু বিদ্যা। ভারত ভূখিন্ডের ইতিহাসে অস্ত্রের উদ্ভব, তার বিবর্তন, বৈদেশিক প্রভাব, বিজ্ঞান আর ধাতুবিদ্যা নিয়ে এক জটিল রাজনৈতিক সমীকরণকে সহজ সরল ভাষায় পাঠকের কাছে পৌঁছে দিয়েছে এই বই। পৌরানিক কালের কল্পনার অস্ত্র থেকে অতি আধুনিক অস্ত্রে সমৃদ্ধ ভারত পাকিস্তান বাংলাদেশ সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর তথ্যে সমৃদ্ধ আর তাদের বিভিন্ন অস্ত্রের বিবর্তন, সাথে তার মারণ ক্ষমতা, প্রয়োগের নিয়ম আর এই ভূখন্ডের বিভিন্ন যুদ্ধে তাদের সুকৌশল ব্যবহারের ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে এই দুই মলাটের মধ্যে।