অসমাপ্ত আত্মজীবনী (স্ট্যান্ডার্ড) - শেখ মুজিবুর রহমান | বইবাজার.কম

অসমাপ্ত আত্মজীবনী (স্ট্যান্ডার্ড)

    5 Ratings     3 Reviews

WISHLIST


Related Bundles


Bundle Title Price
1
রক্তাক্ত বান্ডেল

৳ ১১০০



Overall Ratings (2)

Sohag
22/04/2020

বই : অসমাপ্ত আত্মজীবনী লেখক : শেখ মুজিবুর রহমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বইটির আবেদন বহুমাত্রিক। ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ শেষ পর্যন্ত শুধুমাত্র একটি আত্মজৈবনিক বই হয়ে থাকেনি, হয়ে উঠেছে ১৯৩৯ থেকে ১৯৫৪-৫৫ সাল পর্যন্ত উপমহাদেশের বিশেষত পূর্ব বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসের অনবদ্য, নিরপেক্ষ, নির্মোহ দলিল; একজন হৃদয়বান নেতার এই অঞ্চলের সাধারণ মানুষের সমস্যাগুলোকে গভীরভাবে অনুধাবন করে সেসব সমাধানের সংগ্রামের অসাধারণ আখ্যান; টুঙ্গিপাড়া গ্রামের এক দুরন্ত কিশোরের সারা বাংলার মানুষের প্রতিনিধি হয়ে ওঠার এক অন্তরঙ্গ গল্প। বইটির ভাষারীতি অত্যন্ত সহজ, সুন্দর এবং সাবলীল, অনেকটাই শেখ মুজিবুর রহমানের মুখের ভাষার কাছাকাছি। অসাধারণ চড়াই-উৎরাইয়ে ভরা লেখকের জীবনের গল্প যে কোন রোমাঞ্চ উপন্যাসকেও হার মানায়। ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বইটির পরিক্রমা মূলত দুইটি প্রধান কিন্তু সম্পূর্ণ ভিন্ন ধারায় প্রবাহিত। ধারা দুটো হল লেখকের রাজনৈতিক জীবন এবং লেখকের ব্যক্তিগত জীবন। বইটির আঙ্গিক, ধরন এবং বই সংশ্লিষ্ট বিতর্ক সংক্রান্ত প্রাসঙ্গিক আলোচনার পূর্বে বিষয়বস্তুর এই দুই অলিন্দ – লেখকের রাজনৈতিক জীবন এবং ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কিছু কথা বলা যাক। শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনীতির সাথে প্রথম প্রত্যক্ষ সংস্রব ঘটে ১৯৩৮ সালে । যদিও তখনও তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় নি। সে বারে তৎকালীন বাংলার প্রধানমন্ত্রী শেরে বাংলা এবং শ্রমমন্ত্রী শহীদ সাহেব গোপালগঞ্জে এসেছিলেন একটি সভা উপলক্ষে। সেখানেই প্রথম মিশন স্কুলে শহীদ সাহেবের সাথে শেখ মুজিবুর রহমানের কথা হয়। পরবর্তীতে এই পরিচয়ের সূত্র ধরে লেখক শহীদ সাহেবকে নিয়মিত চিঠি লেখা শুরু করেন এবং ১৯৩৯ সালে কলকাতায় বেড়াতে গিয়ে শহীদ সাহেবের সাথে দেখা করেন। এবং সেখান থেকে ফিরে এসেই গোপালগঞ্জে মুসলিম ছাত্র লীগ গঠন করেন এবং তিনি তাঁর সম্পাদক হন। এভাবেই শুরু হয় লেখকের রাজনৈতিক জীবন। লেখকের রাজনৈতিক জীবনের বিস্তৃত বর্ণনা এই আলোচনায় বাহুল্য। তবে রাজনৈতিক জীবনের শুরুতে দুর্ভিক্ষ এবং তারপর বিহার ও কলকাতার দাঙ্গায় লেখকের সক্রিয় ভূমিকার কথা অবশ্যই উল্লেখযোগ্য । বিশেষত ’৪৬ এর দাঙ্গার সময় লেখক নিজে কলকাতায় ছিলেন বলে সে সময়ের কলকাতার দাঙ্গার বিবরণ বেশ বিস্তৃতভাবে এসেছে এই বইয়ে। শেখ মুজিবুর রহমান সে সময়ে দিনরাতের ব্যবধান ভুলে গিয়ে দাঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্যে কাজ করে গিয়েছেন। দাঙ্গাক্রান্ত প্রতিটি আর্ত মানুষের জন্যে লেখকের যে আর্দ্র আবেগ, তাদের সহায়তার জন্যে প্রতিনিয়ত নিজের জীবন বিপন্ন করে যেই সংগ্রাম, তাদের অমঙ্গল আশঙ্কায় যে ব্যক্তিগত উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা তা অবশ্যই স্মরণীয় এবং শিক্ষণীয়। দাঙ্গার পরপরই দেশভাগের প্রসঙ্গ এই অঞ্চলের রাজনৈতিক কর্মতৎপরতার নির্ধারণী নিয়ামক হয়ে ওঠে এবং আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসে। দেশভাগের প্রাক্কালে পাকিস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে বাংলার মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির যে স্বপ্ন শেখ মুজিবুর রহমান দেখেছিলেন তার সাথে অবশ্যই পাঠক একাত্মতা অনুভব করবেন। সে সময় লেখক দেশভাগের জন্যে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে এতটাই ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন যে তিনি তাঁর ব্যক্তিগত পড়াশোনাও মুলতবি রেখেছিলেন। এ ব্যাপারে লেখকের যুক্তি ছিল খুবই পরিষ্কার, একটি নিজস্ব দেশই যদি না পাওয়া যায় তাহলে পড়াশোনা করে কী লাভ? অবশেষে সেই বহু আকাঙ্ক্ষিত পাকিস্তান পাওয়া গেল। কিন্তু খুব অল্প সময়ের মধ্যেই শেখ মুজিবুর রহমান বুঝতে পারলেন, স্বাধীন দেশে সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির যে স্বপ্ন তিনি দেখেছিলেন তা অধরাই থেকে যাচ্ছে। দেশভাগের পরেও শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক গুরু শহীদ সাহেব পশ্চিম বাংলার সাধারণ, নিপীড়িত মানুষদের কথা চিন্তা করে সেখানেই থেকে গেলেন। এদিকে নাজিমুদ্দীন নেতা নির্বাচিত হয়েই ঢাকায় চলে এলেন এবং মুসলিম লীগে শুরু হল দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতির কাল। এই সময়ে শেখ মুজিব তাঁর অবস্থান থেকে সব সময়ই অন্যায়ের যথাসাধ্য প্রতিবাদ করেছেন, কথা বলেছেন নিপীড়িত মানুষের হয়ে। সে সব বর্ণনা অত্যন্ত প্রাঞ্জলভাবে এই বইয়ে উঠে এসেছে। আরও এসেছে ’৪৮ সালে বাংলাভাষাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে প্রথম যেই আন্দোলন দানা বেঁধে ওঠে তার কথা, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিম্ন শ্রেণীর কর্মচারীদের নায্য দাবি আদায়ের আন্দোলনের কথা, যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনের কথা, আদমজীর দাঙ্গার কথা; আর এ সবই লেখক বর্ণনা করেছেন তাঁর প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার আলোকে। শেখ মুজিবুর রহমান সবসময়ই সাধারণ জনগণের জন্যে রাজনীতি করতেন। তাঁর রাজনৈতিক আদর্শ ছিল সর্বজনগ্রাহ্য কারণ সেগুলো ছিল সহজবোধ্য। তিনি কমিউনিস্ট নেতাদেরে প্রায়ই বলতেন, আমার জনগণ যদি নাই বুঝতে পারে তাহলে আদর্শের উড়োজাহাজ চালিয়ে কী লাভ?


Faruk
17/12/2018

অসাধারন একটি বই । এই বইটি আমি তিন বার পরেছি। বইটি যতবার পড়ি ততবারই ভালো লাগে।


PAYMENT OPTIONS

Copyrights © 2018-2024 BoiBazar.com