প্রথম ফ্ল্যাপ জ্ঞানতত্ত্ব ও প্রায়োগিক উভয় বিচারেই অর্থনীতিশাস্ত্র গুরুত্বপূর্ণ। অর্থনীতিশাস্ত্র প্রকৃতিবিজ্ঞান নয়, নীতিশাস্ত্র। উদ্ভব সূত্রে দর্শন ও নীতিশাস্ত্রের অংশ হিসেবে অর্থশাস্ত্রে নির্মোহতা ছিল। কিন্তু যখন থেকে “নিয়ামক-নিয়ন্ত্রক ক্ষমতাসীন শ্রেণির” স্বার্থ রক্ষার বাহন হিসেবে দেখা দিল তখন থেকেই অর্থনীতিশাস্ত্রকে অনেক মৌলিক বিষয়াদি বিসর্জন দিতে হয়েছে। বলা চলে তখন থেকেই শুরু “অর্থনীতিশাস্ত্রে দর্শনের দারিদ্র্য”, যে দারিদ্র্য ক্রমবর্ধমান। অর্থশাস্ত্রের পণ্ডিতদের মধ্যে নির্মোহ বস্তুনিষ্ঠ বিষয় বর্জন, ‘বিদ্যাভিমান’, ‘জ্যাতাভিমান’, অন্যের মৌলিক অবদান স্বীকার না করার ‘মননের দারিদ্র্য’ যথেষ্ট-মাত্রায় লক্ষণীয়। নীতি-নৈতিকতার নিরিখে এ শাস্ত্রের অধোগতি হয়েছে, হয়েছে পশ্চাদপসরণ: দীর্ঘকাল সুনীতিশাস্ত্রীয় বিষয় থেকে এক সময়ে “দর্শনের দারিদ্র্য”, ক্রমান্বয়ে তা রূপ নিয়েছে ‘দর্শনের মহাদারিদ্র্যে’, আর এখন বলা চলে “শাস্ত্রীয় স্বেচ্ছামৃত্যু”। বিগত আড়াই হাজার বছরের সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি বিশ্লেষণ করে জ্ঞানপিপাসু পাঠকদের জন্য রচিত এ গ্রন্থে লেখক যুক্তি দেখিয়েছেন যে বৃহত্তর কল্যাণের স্বার্থে অর্থশাস্ত্রের রূপান্তর প্রয়োজন; এবং এ লক্ষ্যে তিনি কিছু দিকনির্দেশনা উপস্থাপন করেছেন।