একজন নিখোঁজ ব্যক্তিকে খুঁজতে গিয়ে অন্য একজন নিখোঁজ হলেন। দুজনের কেউই জানে না, তারা হারিয়ে গেছে। এ রকম একটি গল্প বলার চেষ্টা করেছি। মাঝে মধ্যে দুজনকে একই মানুষ মনে হবে। মাঝেমধ্যে মনে হবে, ওরা আসলে দুজন না। ওরা তিনজন।
মনস্তাত্ত্বিক বিভ্রমের নানান স্তরের কর্মকান্ড থেকে এক একটি চরিত্র ধার করা হয়েছে। একটা মানুষ যখন তার কল্পনাকে সত্য মনে করে তখন তার চিন্তা করার সিস্টেমগুলো কেমন করে কাজ করে? কিংবা সমস্যা যখন আরও জটিল হয়? সত্যকে তিনি কল্পনা মনে করছেন!! চারপাশের সবকিছু অ্যাবস্ট্রাক্ট ছবির মতো-অর্ধেক বস্তু অর্ধেক কল্পনা।
কিংবা কোনো একটি গল্পের চরিত্র জীবিত একজন মানুষকে মৃত মনে করছে। যাকে তার মৃত মনে হয়, তাকে ব্যাপারটা জানানো হয়েছে। তারা দুজন মিলে সাইকিয়াট্রিস্টের কাছে গেলে সবকিছু উল্টো দিকে ঘুরতে শুরু করে। ভোরবেলায় যে রকম রাত আর দিনের মধ্যে সাক্ষাৎ ঘটে, সে রকম সম্বন্ধ হয় ডিলিউশন আর হ্যালুসিনেশনের মাঝে। যেন ইথারে মিলিয়ে যায় বস্তুগত সূর্য, ভাবগত প্রেম অথবা জীবন।
জুনায়েদ ইভান
১৯৮৮ সালের আগস্ট মাসে আমার জন্ম। আমার জন্ম হয়েছিল ভোরবেলায়। তখন চারদিক থেকে আজানের শব্দ ভেসে আসছে। এর ভেতরে রোগা-লিকলিকে একটা শিশু হাত-পা নাড়িয়ে জানান দিচ্ছে- 'আমি এসেছি, আমার কোনো অনুলিপি নেই'। আমি এমবিএ করেছি একটা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। একটা রক ব্যান্ডে গান গাই। ফ্যামিলি বলতে আব্বু, আম্মু আর ছোটো দুই বোন- ইশিতা, অর্ণিমা। বর্তমানে দুই বোন আমেরিকায় পড়ালেখা করছে। একবার এক বইয়ের মলাটে লেখক পরিচিতি বয়ানে একটা লেখা পড়েছিলাম, অনেকটা এ-রকম: লেখকের পরিচয় তার গ্রামের বাড়ির ঠিকানায় থাকে না। লেখকের পরিচয় বইয়ের প্রত্যেকটি পৃষ্ঠায়, শব্দে-শব্দে, অক্ষরের ভেতরে মিশে থাকে। আমার কাছেও তাই মনে হয়। বইয়ের ভেতরে যে চরিত্রগুলো ভিন্ন ভিন্ন মতে একমত হন, সেখানে কোনো এক ফাঁকে লেখক লুকায়িত। লেখক এবং তাঁর চরিত্র পৃথক সত্তা, তবু কোথাও-না-কোথাও তাদের মধ্যে এক ধরনের অন্ত্যমিল খুঁজে পাওয়া যাবে।