‘আমি আবার কাঁদব হাসব, এই জীবন জোয়ারে ভাসব, ... ঝড়ের কাছে রেখে গেলাম আমার ঠিকানা’ – সলিলীয় এই গানটি, বাণীর দিক থেকে প্রায় যেন একই রকম কথা বলে। কিন্তু ভাব ও সুরে সলিলের এই গানে আছে তীব্র রোমান্টিক উদ্দীপনা, আর মহীনের ‘ফিরে আসব’তে সেই উদ্দীপনার জায়গা নেয় নিখাদ বিষণ্ণতা। এই বিষণ্ণতাই মহীন এবং সলিল চৌধুরির মধ্যের ছেদবিন্দু। এখানে দাঁড়িয়ে, ঠিক যেভাবে প্রায় একই কথা একদা সলিল নিজেই বলেছিলেন রবীন্দ্রনাথকে, মহীন এবং তার পিতৃপুরুষ গৌতম চট্টোপাধ্যায় যেন সেই সুরেই সলিল চৌধুরিকে বলছেন, তুমি আমার পিতা, কিন্তু আমার পথ এবার আলাদা হল। কারণ আমার অন্ধকারের রঙও বদলে গেছে, আমার মধ্যে ঢুকে গেছে এই জীবনানন্দীয় বিষণ্ণতা। এখানে দাঁড়িয়েই জীবনানন্দ পরবর্তী সময়ে কাব্যের মধ্যে যে সুর, সেই সুর গানের মধ্যে ঢুকছে, তার কথার মধ্যে ঢুকছে। এর মধ্যে চিরন্তন ভালোবাসা, চিরন্তন বিচ্ছেদের সমস্ত দুঃখগুলো আছে, কিন্তু সেটা আর শুধু সাদা-কালোর দুঃখ নয়, এর মধ্যে আরও রং, অনেক শেড ঢুকে গেছে। এই উপচে পড়া বিষণ্ণতাই সেই জিনিয়াসের চিহ্ন, যার নাম মহীন।' - দেবজ্যোতি মিশ্র