১৯৭৪ সালে বিচিত্রায় সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের প্রথম গল্প বেরিয়েছিল, ‘বিশাল মৃত্যু’। ওই গল্পের অপ্রচলিত শৈলী, অপ্রথাগত ভাষা এবং কাহিনীবর্ণনা পাঠকদের আকর্ষণ করেছিল। সমালোচনাও হয়েছিল, এর “ধ্বংসাত্মক প্রবণতার” জন্য। তারপর বহুদিন তিনি গল্পই লেখেননি। ১৯৮৯ সালে বিচিন্তার ঈদ সংখ্যায় একটি গল্প লিখে তিনি পুনরায় ফিকশনের রাস্তায় আসেন। সেই গল্পটিতে আভাস ছিল, তিনি একটি স্বতন্ত্র ধারা নির্মাণ করছেন। আজ তিনটি গল্পগ্রন্থের পর সহজেই বলা যায়, সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম একটি একান্ত নিজস্ব স্টাইল সৃষ্টি করেছেন, যাতে বাস্তব এবং অবাস্তবের, স্থিতি এবং অস্থিরতার, সচেতন বোধ এবং বিভ্রমের একটি আশ্চর্য মিশ্রণ ঘটতে থাকে প্রতিমুহুর্তে; নিশ্চিহ্ন হয় লঘু গুরু বিভাজন। গল্পকার হয়ে দাঁড়ান এক সংবেদনশীল story-teller, যিনি পাঠককে হাত ধরে তার গল্পের ভুবনে নিয়ে যান, এবং পাঠকেরা হয়ে যায় তার গল্পের অনিবার্য অংশ।
সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম
সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম একজন প্রখ্যাত লেখক, অধ্যাপক এবং কলামলেখক। তিনি ১৮ জানুয়ারি ১৯৫১ সালে সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। পরে, ১৯৮১ সালে কানাডার কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উইলিয়াম বাটলার ইয়েটস-এর কবিতা নিয়ে পিএইচডি অর্জন করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন এবং সাহিত্য ও শিল্পকলায় বিশেষ প্রাজ্ঞ ছিলেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে "স্বনির্বাচিত শ্রেষ্ঠ গল্প," "আধখানা মানুষ," এবং "নন্দনতত্ত্ব"। "প্রেম ও প্রার্থনার গল্প" বইটি ২০০৫ সালে প্রথম আলো বর্ষসেরা সৃজনশীল বই হিসেবে নির্বাচিত হয়। সাহিত্যে তাঁর সার্বিক অবদানের জন্য তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৯৬) এবং একুশে পদক (২০১৮) লাভ করেন।