ধর্মবীর ভারতীর 'অন্ধ যুগ' (প্রকাশ ১৯৫৫) মহাভারতের অষ্টাদশ দিনের সন্ধ্যাথেকে শ্রীকৃষ্ণের মৃত্যু পর্যন্ত ঘটনাবলি নিয়ে রচিত। রচনার পর থেকে এই পর্যন্ত এটিহিন্দি ভাষার সর্বাধিক মঞ্চায়িত নাটকগুলোর একটি। ইব্রাহিম আলকাজী, এম কেরায়না, রতন থিয়াম, অরবিন্দ গৌড়, রামগোপাল বাজাজ, মোহন মহর্ষির মতো মহাননির্দেশকগণ এই নাটক মঞ্চায়ন করেছেন। ইরাক যুদ্ধের সময় নির্দেশক অরবিন্দগৌড় নাটকটি মঞ্চায়ন করেন আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রসহ। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, মহাভারতের গল্প নিয়ে রচিত এই নাটক কেন এই মহান নির্দেশকগণ বারবার মঞ্চায়ন করেছেন?এর মহানতা কি লুকিয়ে আছে মহাভারতের কাহিনির মধ্যে? মোটেও তা নয়।আসলে মহাভারতের গল্প এই নাটকের কঙ্কালমাত্র। নাট্যকার এর মধ্যে পুরে দিয়েছেন তাঁর সমকালের জীবন এবং জীবনযন্ত্রণাকে, পুরে দিয়েছেন সমকালেরভাবনাকে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, ভারত-পাকিস্তান বিভাজন ইত্যাদির কারণে ভারতীয় জনগণের মনে উৎসারিত হতাশা, ঘৃণা, কুণ্ঠার প্রতীকী প্রকাশ ঘটেছে এই নাটকের সর্বত্র। মানব এবং মানবতা হত্যা, লুণ্ঠন ইত্যাদির কারণে জনমনে যুদ্ধ এবং যুদ্ধাস্ত্রের প্রতি যে ঘৃণা সঞ্চারিত হয়েছে, তার প্রকাশ এই নাটকে। যুদ্ধ-পরবর্তী ভয়াবহ পরিস্থিতি, মানবিক বিপর্যয় চিত্রিত হয় এতে।