মানুষের জীবন একটি বিচিত্র সমগ্র। জীবনে ঘটে যাওয়া বিচিত্র সব ঘটনানির্ভর অদ্ভুত সব অধ্যায় দিয়ে'ই এই জীবনসমগ্র সাজানো থাকে। যার শুরু থেকে শেষ অবধি জড়িয়ে থাকা অধ্যায়গুলোয় জুড়ে থাকে জীবনের নানান ঘটনা। কখনো আবেগ আর মায়া জড়ানো, কখনো আবার ভয়ঙ্কর নিশ্চুপ আহাজারির নিদর্শন। প্রতিটি অধ্যায়ে ফুটে থাকে মানুষের জন্মলগ্ন থেকে মৃত্যু পর্যন্ত প্রতিটি মুহূর্তের কথন। সেখানে অনুভূতিরা বিচরণ করে বেখেয়ালি ভাবে, আবেগ ছুটে মরিয়া হয়ে এইখান থেকে সেইখানে; সর্বত্র। কখনো কখনো আবার জীবনসমগ্রের কোনো এক অধ্যায়ে ভালোবাসা ধারণ করে মাহামারী আকারে। কেবল অফুরান ভালোবাসা'ই যেনো সর্বার্থ। সবকিছুতেই যেন ভালোবাসার উপস্থিতি অনিবার্য। কিন্তু দায়িত্বের বেড়াজালে যখন নিজেকে বিসর্জন দিতে হয় তখন জীবনসমগ্রের অতীত অধ্যায়ের অবসান ঘটিয়ে নতুন এক অধ্যায়কে বরণ করে নিতে হয়। কৃত্রিমতায় ভরা সত্য হাসির অবয়বে মিথ্যা হাসিতে। যেখানে অনুভূতি, আবেগ আর ভালোবাসা সব যেন সীসার বেষ্টনীতে গড়া কঠিন ধাতব সিন্ধুকে ভরে অথৈ সমুদ্রজলে ডুবিয়ে দেয়া আবশ্যক। ভেসে চলে যাবে। কোথায় যাবে, কতদূর যাবে তা জানবার কোনো উপায় থাকে না। তবুও ভাগ্যের রোষানলে পড়ে যদি সেই সিন্দুক তীরে ভিরে, তখন অনেক দেরি হয়ে যায়। অনেক আবেগ আর ভালোবাসা তখন গুপ্তধন রূপে ফিরে এলে তা কেবলই যেন যাদুঘরে স্থান পাবার যোগ্য; মনের ঘরে নয়। দেখে সুখ নেবার স্বাধীনতা থাকে কিন্তু ছুঁয়ে কিংবা লালন করার স্বাধীনতা থাকে না।
তকিব তৌফিক
একজন লেখককে স্বপ্ন দেখতে জানতে হয়। তকিব তৌফিক নিজেই আস্ত একটা স্বপ্ন। এই ছেলের চোখ কথা বলে। সেখানে আছে গল্প নিয়ে পাগলামী। জীবনের মানে খুঁজতে বের হয়ে পড়া ছেলেটা তার লেখা গল্পে শব্দ, বাক্যে বুননের কারসাজি দেখিয়ে মুগ্ধ করেন পাঠকদের। গল্পের অলিগলিতে হাঁটতে হাঁটতে আমরা ভাবি। তকিব তৌফিকের গল্পগুলাে আমাদের জীবন নিয়ে ভাবাতে বাধ্য। করে। এপিলেপটিক হায়দার' দিয়ে এই লেখক যে যাত্রা। শুরু করেছেন বােঝা যায় তা থামার জন্য নয়। পাঠকরা। ভালােবেসে, ভালাে লাগার জায়গা থেকে লেখকের। লেখাগুলােকে হৃদয়ে ঠাই দিয়েছেন। ভালােবাসার কাঙাল লেখকের আর কী চাওয়ার আছে? চলতি পথে তকিব তৌফিকের পরবর্তী উপহার ‘অধ্যায়'। যে শ্রম নিঘুম রাত কাটানাে সংগ্রাম এই উপন্যাসের পেহনের আছে তা সফল হােক। একটা স্পষ্ট হৃদয়ের অভাবে অস্পষ্ট হয়ে আছে আমার এই মানুষ মন দিনের। পর দিন ভেবে ‘অধ্যায় উপন্যাসের জন্য লেখা এইসব লাইন টিকে থাকুক মানুষের মাঝে। পাঠক আগলে রাখুক যত্নে রাখুক অধ্যায়। তকিব তৌফিকের বড় শক্তি তার স্বপ্ন দেখার যােগ্যতা। লেখক পরিচয়ের পাশাপাশি তার ক্ষেত্রে আরও বেশি জরুরি হয়ে ওঠে ভালাে মানুষ হয়ে থাকা। ভালাে মানুষকে ভালােবাসতেই হয়। দারুণ করে হাসতে পারা ভকিব। তোফিকের জন্য ভালােবাসা রইলাে। শুভকামনা রইলাে। উপন্যাসটির জন্য। 'অধ্যায় আমাদের সকলের জীবনের নানান অধ্যায়ের ভেতরে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হয়ে। থাকুক আজীবন, থাকবে।