
অক্টোবর রেইন (হার্ডকভার)
প্রথমেই বলে রাখি আমি নিতান্তই তুচ্ছ এক পাঠিকা। বেশি দিন হয়নি বই পড়ি। ফেসবুকের জগৎ থেকে অনুপ্রেরিত হয়েই বইয়ের মলাটে পদার্পন। তাই এত বড়ো মাপের একজন লেখকের বইয়ের রিভিউ কিভাবে লিখব কি ই বা লিখবো বুঝতে পারছিলাম না তাই ভয় পাচ্ছিলাম আর আমি নিজের মনের ভাব প্রকাশে একটু অক্ষম। তবু চেষ্টা করছি ভুল হলে খমা করবেন। অক্টোবর রেইন নিয়ে কি বলব। যতটুকু বলব কম পরবে। এই উপন্যাসটি আমি প্রথম ফেসবুকের পাতায় দেখি। নামটা দেখে তখন অতটা আগ্রহ প্রকাশ করিনি তবুও সময় কাটাতে চোখ বোলাচ্ছিলাম। বলে রাখা ভালো এই গল্পের মাধ্যমেই লেখিকার লেখার সাথে প্রথম পরিচয়। আস্তে-ধীরে এগুচ্ছিলাম আর ধীরে ধীরে গল্পের মাঝে ডুব দিচ্ছিলাম। প্রতিদিন রাত ১০টার অপেক্ষায় থাকতাম। যতক্ষণ পড়তাম আমার মনে হতো আমি কোনো ঘোরের মাঝে আছি।সব যেন চোখের সামনে ভাসছে। লেখিকার শব্দ চয়নে আমি মুগ্ধ।এত্ত সুন্দর শব্দের ভান্ডার আমি অন্য কারো লেখায় পড়িনি। এমন শব্দ যা পড়তে অনিহা না বরং অন্যরকম এক ভালোলাগা কাজ করে। মনের মাঝে এক তরঙ্গের সৃষ্টি করে। ভালোলাগায় বুদ হয়ে যাই। আরেকটা জিনিস ভালো লাগে লেখিকা বানানের প্রতি যথেষ্ট সতর্ক।আমি নিজেও তাই ভালো লাগলো। এবার আসি উপন্যাসের চিরিত্রে। গল্পে মেইন চরিত্র আরশান এবং সকাল। কিন্তু লেখিকা কাউকেই কোন অংশে কম রাখেন নি। সবাই সবার জায়গায় ঠিক। আরশান আমার খুব প্রিয় চরিত্র। ছেলেটা ছোটবেলা থেকেই বঞ্চিত হয়ে আসছে। আমার ওর জন্য খুব খারাপ লেগেছে। আমি ওকে নিয়ে পড়ার সময় খুব করে কেঁদেছি। কেন পৃথিবীতে তাকে সবাই ঠকায়। তার ও একটা মা ছিল। সকাল যে গল্পের নায়িকা, খুবই সাধারণ এক আটপৌরে বাঙালি নারী। কিন্তু লেখিকার লেখার ধারে সেই অতি সাধারণ নারীকেই ঐ হামবড়া, নাকউঁচু, অহংকারী ছেলেটা নিজের মনের রানি করে ফেলেছে। উফফ হরিণডাঙগা নিয়ে কি বলব!!গল্পে ফাহাদ, নাবিলা, টিলি সকলেই ছিল তাদের প্রনয়ের যোগসূত্র। ফাহাদ এর কৃতিত্ব ও কোন অংশে কম নয়। চাচি ও নিজের দিক দিয়ে ঠিক ছিল। চাচার ঐ কাজটার কারন আমি বুঝতে পারলাম না। এর বেশি বললে স্পয়লার হয়ে যাবে। সব শেষে নিজের কিছু বলি, যখন হুট করে শুনি অক্টোবর রেইন ২০২০ তেই আসছে লেখিকা তার পাঠকদের সারপ্রাইজ করাতে চেয়েছিল এবং সে সার্থক। সেই রেশ ধরেই অনেক অপেক্ষা করে সে কাঙ্খিত মুহুর্তটি আসে আর আমি বইমেলায় গিয়েই বইটি সংগ্রহ করি আলহামদুলিল্লাহ। পড়তে শুরু কিরেছিলাম তুমুল আবেগের সাথে কিন্তু কৌতুহলবশত শেষ পাতায় উঁকি দিয়ে দেখি উপন্যাস সেখানেই সমাপ্ত যা ফেসবুকেই সমাপ্তি হয়েছিল কিন্তু হয়তো তা আমি জানতাম না। তাই একে নিয়ে আরেকটু বেশিই আশা ছিল। মন খারাপ ছিল তাই মাঝে গ্যাপ দিয়েছিলাম। পরে উপন্যাসটি শেষ করি। আসলেই অক্টোবর রেইন এতটুকুতেই যেন সব প্রাপ্তি হয়ে গেছে। সে একাই মাস্টার পিস। পুরো বই ই একটা ভালোলাগার খাজানা। আর কিছু পাচ্ছি না অনুভূতি প্রকাশ করার জন্য। এত তাড়াতাড়িই যে প্রিয় উপন্যাস কে বুক শেল্ফে সাজাতে পারব ভাবিনি। বালিশের কাছে রাখতে পারব, ইচ্ছা হলেই ছুঁতে পারব, ঘ্রাণ নিব সত্যিই ভাবিনি। খুব খুব খুব ধন্যবাদ আপুকে। ভালোবাসা নিবেন। প্রিয় লাইনঃ ♦"বলো পৃথিবী, কার অক্টোবর বেশি সুন্দর তোমার না অামার?" ♦"আজকের সন্ধ্যার সবচেয়ে সুন্দর মেয়েটার জন্য" ♦ "তাহলে মাথা মুছে কাজ নেই। আমি চাই জ্বর আসুক।" ♦" আপনার প্রতিটা খুটিনাটি বিষয়ই আমার জরুরি। আপনি কি এটা বোঝেন না?" 🔴" আমি আপনাকে ভালোবাসার চাইতেও বেশি ভালোবেসে ফেলেছি!" অারও অনেক আছে বলে শেষ করা যাবেনা।
SIMILAR BOOKS
