ব্লগের যুগ পেরিয়ে আমরা ঢুকলাম ফেসবুক যুগে, এরপর এলো বইয়ের যুগ। নাস্তিকদের জবাব দিয়ে লেখাগুলো কাগজের পাতায় উঠে এলো, মলাটবদ্ধ অবস্থায় ঘরে ঘরে পৌঁছে গেল। দেখা যায় এই বইগুলোর সিংহভাগেই নাস্তিকদের জবাব দেওয়াটাকেই ফোকাস করা হয়। এই ধারাটার অবশ্যই দরকার আছে, তবু মনে হতো যদি এমন একটা বই লেখা হতো যেখানে তাদের প্রশ্ন ধরে ধরে জবাব না দিয়ে বরং তারা যে ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে এসব আপত্তি তোলে, সেই ভিত্তিটাকেই নাড়িয়ে দেওয়া যাবে! সেই আশার পালে হাওয়া দিলেন রাফান আহমেদ ভাই। তিনি লিখলেন ‘বিশ্বাসের যৌক্তিকতা’, খুব ছোট্ট কিন্তু ওজনদার সে বইটা ছিল ট্রেইলার। ট্রেইলারের কুঁড়িটা পুষ্প হয়ে ফুটল ‘অবিশ্বাসী কাঠগড়ায়’– এ।
বইটা ব্যতিক্রমী এজন্যই যে, এটা টিপিক্যাল ‘নাস্তিকদের আপত্তির জবাব’ টাইপ লেখা না। এখানে লেখক হুমায়ূন আজাদদের মনস্তত্ত্ব, তাদের আদর্শের স্ববিরোধিতা এবং তারা অবিশ্বাসের মোড়কে যে সংকীর্ণ বিশ্বাসগুলো লালন করে সেগুলোকে দর্শন ও বস্তুবাদী বিজ্ঞানের আলোকে উন্মোচন করেছেন। বইটার গুরুত্ব আরও বেড়েছে একারণে যে, লেখক মুসলিম স্কলারদের থেকে খুব বেশি সাহায্য না নিয়ে বরং হুমায়ূন আজাদরা যে পশ্চিমা দার্শনিক ও বৈজ্ঞানিকদের বক্তব্যকে প্রবাদতুল্যজ্ঞান করে, সেই দার্শনিক ও বৈজ্ঞানিকদের বক্তব্য দিয়েই আজাদদের চিন্তার দৈন্যকে স্পষ্ট করেছেন।
বহুদিন স্টক আউট থাকার পর অবিশ্বাসী আবারও ফিরে এলো কাঠগড়ায়! নতুন রূপে হাজির হয়েছে ‘অবিশ্বাসী কাঠগড়ায়’। বেড়েছে তার কলেবর। পাল্টেছে তার চেহারা।
রাফান আহমেদ
রাফান আহমেদঃ লেখক, অনুবাদক, ব্লগার, অনলাইন একটিভিস্ট পেশায় একজন চিকিৎসক। জন্ম এই ইট-কাঠের যান্ত্রিক শহরে। অষ্টম শ্রেণি থেকে টানা দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বৃত্তি পেয়ে প্রথম সারির সরকারি মেডিকেল কলেজে অধ্যয়ন করেছেন। জীবনের বাঁকে একসময় সংশয় ও। নাস্তিকতার চোরাগলিতে ঘুরে বেড়িয়েছেন। সত্যের সন্ধানে চলার চেষ্টা করেছেন, চেষ্টা চলছে, চলবে ইনশাআল্লাহ। 'বিশ্বাসের যৌক্তিকতা' তার। প্রথম গ্রন্থ। বর্তমানে কাজ করছেন আরও কিছু অনুবাদ নিয়ে। তার আগ্রহের বিষয় তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব, হাদিসশাস্ত্র, ফিলােসফি অফ সাইন্স, ইভােলিউশনারি বায়ােলজি।