১৭৩৯ সালে নাদির শাহ দিল্লি অভিযানে আসেন এবং জানতে পারেন অমূল্য একটি হীরক খণ্ড ওই সময়ের মোগল শাসক মোহাম্মদ শাহের পাগড়ির ভাঁজে লুকানো আছে। বন্ধুত্বের নির্দশন হিসেবে পুরানো ঐতিহ্য অনুযায়ী তিনি মোগল সম্রাটের সঙ্গে পাগড়ি বিনিময়ের প্রস্তাব করেন এবং এভাবে নাদির শাহ হীরকটির মালিকানা লাভ করেন। তিনি পাগড়ির ভাঁজ খুলে হীরকের আকৃতি, ঔজ্জ্বল্য ও সৌন্দর্য দেখে বিস্ময়ে বলে ওঠেন, “কোহ-ই-নূর” (আলোর পর্বত)। তখন থেকেই এটি ‘কোহ-ই-নূর’ বা ‘কোহিনূর’ নামে পরিচিত হয়। ওই সময়ের হিসাব অনুযায়ী ‘কোহিনূর’-এর মূল্য সমগ্র পৃথিবীর সাত দিনের আয়ের সমান এবং সমগ্র পৃথিবীকে আড়াই দিন খাওয়ানো সম্ভব। চারটি জাতি: হিন্দুস্থানি, আফগান, পারসিক ও ইংলিশদের ভাগ্য এই অমূল্য হীরকের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িয়ে আছে।
একজন পারসিক ব্যবসায়ীর পুত্র, যিনি ভারতের গোলকোণ্ডা শাসন করেন এবং সেখানকার হীরার খনি থেকে এই হীরাটি পেয়েছিলেন। হাত ঘুরে সেটির মালিকানা লাভ করেন মোগল সম্রাটরা এবং মোগলদের মধ্যে ইতিহাসে নিন্দিত সম্রাট মোহাম্মদ শাহ’র হাত থেকে যায় নাদির শাহ, আফগান শাসক, পাঞ্জাবের মহারাজা রণজিৎ সিং এবং তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র দালিপ সিং-এর কাছ থেকে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ হাতিয়ে নেয় বিখ্যাত ‘কোহিনূর’। ১৮৪৯ সাল থেকে প্রায় পৌনে দুশো বছর যাবৎ কোহিনূর ব্রিটিশ ক্ষমতার প্রতীক হয়ে আছে।