১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গের সময় থেকে ভারতবর্ষে, বিশেষ করে বাংলায় ইংরেজবিরোধী বিপ্লবী আন্দোলন নতুন রূপ পেতে থেকে। আরম্ভটা আরেকটু আগে, উনবিংশ শতাব্দীর শেষ ভাগে। ভগিনী নিবেদিতা, ওকাকুরা, যতীন্দ্রনাথ, সুরেন্দ্রনাথ ঠাকুর হয়ে এক সময় অরবিন্দের কাঁধে চলে আসে বিপ্লবী সন্ত্রাসবাদের ভার। অরবিন্দ এবং তার ভাই বারীন গ্রেফতার হবার পর বিপ্লবের মশাল চলে এলো বাঘা যতিন আর তার শিষ্য নরেন ভট্টাচার্যের (এম এন রায়) হাতে। বিপ্লবী আন্দোলন কেবল ভারতবর্ষেই সীমাবদ্ধ থাকলো না বরং রাসবিহারী বসু, নরেন ভট্টাচার্য, হেমচন্দ্র, বীরেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের মত বিপ্লবীদের কারণে বাংলার বিপ্লব- প্রয়াস ছড়িয়ে পড়লো সারা পৃথিবীতে। ভারতবর্ষের বিপ্লবের সাথে জড়িয়ে পড়লো জার্মানী এবং রাশিয়া। লেনিনের নেতৃত্বে রাশিয়ার বিপ্লব-প্রয়াসের প্রায় সমান্তরালে চলতে থাকলে বাংলা এবং ভারতবর্ষে ইংরেজবিরোধী বিপ্লবের প্রচেষ্টা। এই উপন্যাসে একই সঙ্গে ধারণ করা হয়েছে রাশিয়ার বিপ্লবী এবং সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়া বাঙ্গালী বিপ্লবীদের প্রেম এবং বিপ্লবের কাহিনী এবং এসব ভুখন্ডের বিপ্লবীদের আন্তঃসম্পর্ক। কখনো কখনো বিপ্লবীদের চাইতে তাঁদের স্ত্রী কিংবা প্রেমিকাদের ভূমিকা বিপ্লবী কর্মকান্ডে ছিল অনেক বেশী অভিঘাতময়। কিন্তু সেই ভূমিকাগুলো অনেকটাই অন্ধকারের অন্তরালে অদৃশ্য হয়ে আছে। এই উপন্যাসে সেই সব নারীদের ভুমিকাও চিহ্নিত এবং চিত্রিত হয়েছে।