আধুনিক মানবচৈতন্যের বিশিষ্ট এক লক্ষণ নৈঃসঙ্গ্যচেতনা। সৃষ্টির আদিকাল থেকে মানবচিত্তে নৈঃসঙ্গ্যচেতনা ক্রিয়াশীল থাকলেও পুঁজিবাদী সমাজে এসে তা ধারণ করে প্রবল ও ভয়াবহ রূপ। একালে সামাজিক সঙ্গতিশূন্যতা ও বৈশ্বিক বিপন্নতায় মানুষের সনাতন অন্বয় ও সংযুক্তিবন্ধনে ধস নেমেছে প্রবল হয়ে উঠেছে অনন্বয় ও বিযুক্তি। দার্শনিক-মনস্তাত্ত্বিকেরা বলেছেন নৈঃসঙ্গ্যচেতনাই যেন একালের মানসধর্ম। শিল্প-সাহিত্যেও নৈঃসঙ্গ্যচেতনার ব্যাপক প্রভাব লক্ষ করা যায়। ডক্টর বিশ্বজিৎ ঘোষ আধুনিক মানবচৈতন্যের জটিল এই প্রবণতা নিয়ে বিশ্লেষণাত্মক বিবেচনা উপস্থাপন করেছেন বর্তমান গ্রন্থে। আমাদের দেশে এ ধরনের আলোচনার তিনিই সূত্রপাত করেন। আশা করি এ বই কৌতূহলী পাঠক-গবেষকদের ভালো লাগবে।
বিশ্বজিৎ ঘোষ
জন্ম ১৯৫৮ সালে, বরিশালে। ‘বুদ্ধদেব বসুর উপন্যাসে নৈঃসঙ্গ্যচেতনার রূপায়ণ’ বিষয়ে গবেষণার জন্য ১৯৯৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচ ডি ডিগ্রি লাভ। ১৯৮৪ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে কর্মজীবন আরম্ভ। বর্তমানে অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত। বিশ্বজিৎ ঘোষ মূলত প্রাবন্ধিক-গবেষক। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ : বাংলাদেশের সাহিত্য (১৯৯১), নজরুলমানস ও অন্যান্য প্রসঙ্গ (১৯৯৩), আন্তর্জাতিক ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন ও রবীন্দ্রনাথ (১৯৯৪), বুদ্ধদেব বসুর উপন্যাসে নৈঃসঙ্গ্যচেতনার রূপায়ণ (১৯৯৭) ইত্যাদি। ২০১১ সালে গবেষণায় সামগ্রিক অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ লাভ করেন বাংলা একাডেমি পুরস্কার। এছাড়া ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ বাংলা একাডেমির ‘ডক্টর মুহম্মদ এনামুল হক স্বর্ণপদক’, ‘জীবনানন্দ দাশ সাহিত্যপদক’, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘আবদুর রব চৌধুরী স্বর্ণপদক’, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার প্রদত্ত ‘মহাকবি মধুসূদন জাতীয় পদক’, ‘কবি নজরুল স্বর্ণপদক’ লাভ করেন।