গঙ্গা খুব অবাক হয়ে শহরটা দেখছিল। এই প্রথম শহর দেখছে সে। তার চিন্তাভাবনা জুড়ে এক হুলস্থুল, কাণ্ড বেঁধেছে। অনেক ব্যাপারই তার কাছে মারাত্মকভাবে তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে। অকস্মাৎ যেন তার মাথাটা পরিষ্কার হয়ে এলো। অমনি অনেক পুরনো সুতো ছিঁড়ে গেল, কয়েকশো বছর আগে দৌড়ে এলো যেন সে, বুঝতে পারল এটা শহর আর সেটা গ্রাম বুঝতে পারল, সড়ক আর পায়ে হাঁটা পথের মধ্যে তফাত কী। অরণ্য ও উদ্যান কেন একটি অন্যটি থেকে আলাদা!
গোবরে মাখামাখি দেয়াল ও লাল ইট দিয়ে তৈরি দেয়ালের ঝকঝকে সাদা চুনকামের মধ্যে হাজার হাজার বছরে ব্যবধান কেন? বাড়ির গায়ে বাড়ি উঠে কেমন গলি তৈরি হয়েছে। প্রত্যেকটি গলি হৃদয়ের গ্রন্থিবন্ধনে এক-একটি মালা হয়ে উঠেছে মানুষ কেমন পৃথক পৃথকভাবে বসবাস করেও পরস্পরের কাছে যাওয়া-আসা করে এসব মূলতত্ত¡ একেবারে স্পষ্ট নয়, একটা ঝাপসা ঝাপসা ছবির মতো তার মস্তিষ্কে জেগে ওঠে।
তারপর সে শুনতে পায়, যেন কেউ দূরে কুয়াশার মধ্যে হাঁটতে হাঁটতে তাঁর দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়ে এগিয়ে আসছে, তাকে জিজ্ঞেস করছে, ‘তুমি আমায় বিয়ে করবে, গঙ্গা?’