নবিজি: যার আদর্শে বিমোহিত পৃথিবী (হার্ডকভার)

যুদ্ধের সময়ে এবং যুদ্ধের পরবর্তী সময়ে নবিজির আচরণ

মুশরিক, ইহুদি নাসারাদের সাথে নবি কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কিতাল সম্পর্কে সম্যক জ্ঞাত ব্যক্তি অবশ্যই নবি কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উত্তম আচরণ অনুধাবন করতে পারবে। যারা নবি কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অন্যায়, অবিচার ও নিপীড়নের নৃশংসতায় ভোগাত, তিনি তাদের মন্দ আচরণের বিপরীত তাদের সাথে ভালো আচরণ করতেন।

আমরা যখন নবি কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওসিয়ত বা উপদেশগুলো নিয়ে বিবেচনা করব—যে ওসিয়ত বা উপদেশগুলো তিনি তাঁর মুজাহিদ সাহাবাদেরকে করেছিলেন—সে উপদেশগুলোতে নৈতিকতা, উত্তম আচরণ এবং উদ্দেশ্যগুলোর আভিজাত্যের পূর্ণতা খুঁজে পাব।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আব্দুর রহমান ইবনু আউফকে ষষ্ঠ হিজরির শাবান মাসে দাওমাতুল জান্দালে অবস্থিত ‘কালব’ নামক খৃষ্টান গোত্রের নিকট এ উপদেশ দিয়ে পাঠিয়েছিলেন—

فَاغْزُوا جَمِيعًا فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَقَاتِلُوا مَنْ كَفَرَ بِاللَّهِ، لَا تَغُلُّوا وَلَا تَغْدِرُوا، وَلَا تُمَثِّلُوا، وَلَا تَقْتُلُوا وَلِيدًا، فَهَذَا عَهْدُ اللَّهِ وَسِيرَةُ نَبِيِّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَسَلَّمَ.

তোমরা সকলে যুদ্ধ করো আল্লাহর পথে। লড়াই করো তাদের বিরুদ্ধে, যারা আল্লাহর সাথে কুফুরি করেছে। যুদ্ধ চালিয়ে যাও—তবে গণিমতের সম্পদে বিশ্বাসঘাতকতা করবে না, চুক্তি ভঙ্গ করবে না, শত্রুপক্ষের অঙ্গ বিকৃতি সাধন করবে না, শিশুদেরকে হত্যা করবে না। এটাই হলো তোমাদের প্রতি আল্লাহর অঙ্গীকার এবং তাঁর নবির পদ্ধতি।

অনুরূপভাবে মুতার যুদ্ধে সৈন্যবাহিনীদের প্রতি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উপদেশ ছিল—

اغْزُوا بِاسْمِ اللهِ فِي سَبِيلِ اللهِ، قَاتِلُوا مَنْ كَفَرَ بِاللهِ، اغْزُوا وَلَا تَغُلُّوا، وَلَا تَغْدِرُوا، وَلَا تَمْثُلُوا، وَلَا تَقْتُلُوا وَلِيدًا أو امرأة ولا كبيرا فانيا ولا منعزلا بصومعته .

যুদ্ধ করো আল্লাহর নামে, আল্লাহর পথে। লড়াই করো তাদের বিরুদ্ধে, যারা আল্লাহর সাথে কুফরি করেছে। যুদ্ধ চালিয়ে যাও, তবে গনিমতের মালে বিশ্বাসঘাতকতা করবে না। চুক্তি ভঙ্গ করবে না, শত্রুপক্ষের অঙ্গ বিকৃতি সাধন করবে না। শিশুদেরকে হত্যা করবে না। কোনো মহিলা অথবা বয়োবৃদ্ধ কোনো লোককে হত্যা করবে না। কোনো ধর্মযাজককে গির্জা থেকে তাড়িয়ে দেবে না।

নবি কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুদ্ধক্ষেত্রেত ছিলেন ইনসাফপূর্ণ। বিপক্ষ দলকে কিংবা বিশ্বাসঘাতকদেরকে শাস্তি দেয়ার ক্ষেত্রে তিনি সীমালঙ্ঘন এবং অতিরঞ্জন করতেন না। নবি কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনের অনেক ঘটনা থেকে এর প্রমাণ পাওয়া যায়।