নিশুতি-২ সম্পাদনায়- মুহম্মদ আলমগীর তৈমুর আসছে ৬ মে ২০১৯ আমার শৈশবের একটি অংশ কেটেছে গহীন গ্রামের কুপির আলোয় আলোকিত আবছা অন্ধকারে। সেখানে ভূত-প্রেত এবং মানুষের এক ধরনের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ছিল। একজন তার জীবনের একটি অতিপ্রাকৃত অভিজ্ঞতা বর্ণনার সাথে সাথে উপস্থিত সবার জীবনেরই নানাবিধ অতিপ্রাকৃত অভিজ্ঞতা শুনতে পেতাম এবং আমি এই অতিপ্রাকৃতিক প্রজাতির প্রতি শ্রদ্ধামিশ্রিত এক ধরনের ভীতি নিয়ে বড় হয়েছি। বড় হয়ে জানতে পেরেছি ভূত বলে কিছু নেই তবে ভূতের গল্প আছে। শুধু তাই নয়, যখন লিখতে শুরু করেছি তখন কিছুদিন পরপরই একদুটি জমাট ভূতের গল্প লেখার জন্যে হাত নিশপিশ করতো। পাঠককে ভূতের গল্পের প্রকৃত অনুভূতি দেয়ার জন্য প্রায় সব ভূতের গল্পগুলোই লেখা হতো উত্তম পুরুষে! তবে আমার পাঠকের বেশিরভাগই কমবয়সী ছেলে মেয়ে, তাই তারা সত্যি সত্যি আমার এই ভূতের গল্পগুলো বিশ্বাস করে না বলে সেই জন্যে আমি আমার প্রথম ভূতের গল্প বইয়ের পিছনে লিখে দিয়েছিলাম, গল্পগুলো বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য উত্তম পুরুষে লেখা হলেও গল্পগুলো বানানো। ভূত নেই তবে ভূতের গল্প আছে! শহীদ জননী জাহানারা ইমাম আমাকে খুব স্নেহ করতেন। এই সুবিখ্যাত পাঠিকা আমার সেই ভূতের গল্পগুলো পড়ে আমাকে বলেছিলেন, “তোমার ভূতের গল্পের সংকলনের মাঝে আমার সবচেয়ে ভালো লেগেছে বই শেষের স্বীকারোক্তিটুকু!” নিশুতি ২ প্রকাশিত হতে যাচ্ছে। গল্পগুলোর ওপর চোখ বুলাতে গিয়ে আমার আবারও শহীদ জননী জাহানারা ইমামের স্নেহার্দ্র কথাগুলো মনে পড়ছে। তবে এগুলো শুধু ভূতের গল্প নয়, তার চাইতেও এক ডিগ্রী উপরের হরর গল্প। সেখানেই শেষ নয়, তার সাথে যুক্ত হয়েছে থ্রিলার। মানচিত্র দিয়ে এক দেশের দুই মানুষকে ভাগ করে দেয়ার পরও তাদের মাঝে এক ধরনের গভীর যোগাযোগ আছে। সংস্কৃতির নানা বন্ধনের সাথে এখন যুক্ত হলো হরর ও থ্রিলারের বন্ধন! অনুমান করছি এই বন্ধন যথেষ্ট দৃঢ় বন্ধন এবং ভবিষ্যতে আরো অনেকবার তার পরিচয় দেখতে পাব! ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বিভাগীয় প্রধান, ইইই বিভাগ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়