দ্বিজেন শর্মার অধ্যয়নের আগ্রহ ছিল বিবর্তনতত্ত্বে। এর সাথে সাহিত্য, ইতিহাস, জীববিজ্ঞান, পরিবেশবিদ্যাকে সঙ্গী করেছেন। জ্ঞানকাণ্ডের এসব শাখার অসামান্য সম্মিলন ঘটে তাঁর রচনায়। প্রকৃতির পরিচিতি ও বিবরণে সাহিত্যের বিচিত্র উপস্থাপন-দক্ষতায় তাঁর সমতুল্য আর কেউ আছেন বলে আমাদের জানা নেই। এর মূলে প্রত্নকাঠোমো হিসেবে ভূমিকা রেখেছে বৃক্ষবৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ নিজ বাগানবাড়ি এবং প্রতিবেশী পাথারিয়া পাহাড়। পাথারিয়া ও হাকালুকি হাওরের আবহে কেটেছে তাঁর দুরন্ত কৈশোর। ফলত, অপ্রাতিষ্ঠানিক প্রকৃতিশিক্ষা, উদ্ভিদ ও প্রাণ সম্পর্কে ধারণা অর্জিত হয় অসামান্য নিসর্গের আবহে। যে কারণে তাঁকে বলা হয়েছে প্রকৃতিপুত্র। তখনও বিদ্যুৎ যায়নি শিমুলিয়া গ্রামে। কিন্তু শোনা যেত প্যাঁচা কিংবা ভিন্ন পাখির ডাক। এ-বাড়ির পেছনেই হাকালুকি হাওরের সীমানা। সংগত কারণে জলবিলাস ও মাছশিকারের সঙ্গে রয়েছে তাঁর কৈশোরক সংযোগ। এ কৌতূহল থেকেই আমরা কবিরাজ বাড়ি ও বৃক্ষবাগান সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা লাভ করি। অর্থাৎ, বাগান, বৃক্ষ ইত্যাদির সঙ্গে দ্বিজেন শর্মার পরিচিতি শৈশব ও বাল্যকাল থেকে। বোঝা যায় যে, পুথিবিদ্যার বাইরে ঘটেছে দ্বিজেন শর্মার চিন্তাপ্রণালির বিকাশ।