বর্তমানে পৃথিবীর বুকে সীনা টান করে, শির
উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা মুসলিম উম্মাহর জন্য এক চ্যালেঞ্জিং বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমান সময়ে বস্তুবাদী, অপসংস্কৃতি ও অসভ্যতার জয়জয়কার অবস্থা বিরাজমান পুরো পৃথিবী জুড়ে। এ চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা করা অত্যন্ত দুরূহ ব্যাপার। দুঃসাধ্যও বটে। বুদ্ধিবৃত্তিক লড়াই ছাড়া তাদের প্রতিহত করা কোনো ক্রমেই সম্ভব নয়। তাছাড়া ঢাল, তলোয়ার আর ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা; এগুলো দিয়ে তো কোনোভাবেই করা যাবে না। কারণ এমনিতেই মুসলিম উম্মাহর উপর জঙ্গিবাদ আর সন্ত্রাসবাদের তকমা লাগিয়ে স্তব্ধ করে দিয়েছে। মুখ বন্ধ করে দিয়েছে। বন্দিত্বের জিঞ্জির পড়িয়ে রেখেছে।
তাইতো আমাদের আলী মিয়া নদভী রহ. বলেছেন, সাধনার এই পৃথিবীতে অযোগ্য ব্যক্তির কোনো স্থান নেই। যোগ্যদের মূল্যায়নেরও অভাব নেই। কাজেই নিজেকে যোগ্য হিসেবে গড়ে তোলা ছাড়া বিকল্প কোনো পথ নেই। আমাদের আকাবির যারা ছিলেন, তাদের জীবনের পাতা উল্টিয়ে দেখুন, ইলম, আমল ও আখলাকে; প্রত্যেক স্তরেই তাঁরা ছিলেন উজ্জ্বল প্রদীপ ও আলোর পিদিম।
তারা স্ব স্ব যুগে ইসলাম বিরোধী অপশক্তির মেরুদণ্ড ভেঙ্গে দিয়েছিলেন। কোনো অপশক্তির সামনেই তারা মস্তক অবনত করেননি। গাজালী থেকে শুরু করে কাসেম নানুতুবি পর্যন্ত প্রত্যেকেই বাতিলকে পর্যুদস্ত করে তাদের নাম-নিশানা মুছে দিয়েছিলেন। আজ আমি, আপনি, আমাদের আগামী প্রজন্ম সকলেরই বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে শক্তিশালী হয়ে উঠতে হবে। বুদ্ধিবৃত্তিক শক্তিশালী হওয়ার অন্যতম মাধ্যম হলো সঠিক ধারার ইলম অর্জন করা। আমল ও আখলাকের শ্রেষ্ঠত্বের মর্যাদায় উন্নিত হওয়া।
ইলমের গভীরতা ও যোগ্যতা অর্জন ছাড়া কেউ কখনোই এই পৃথিবীতে নেতৃত্ব দিতে পারেনি, আর পারবেও না। কাজেই বর্তমান বিশ্বে আপনার অবস্থান যদি তুলে ধরতে চান, ইসলামের সুমহান বাণী যদি কাউকে শোনাতে চান তাহলে নিজের ইলমের পরিপক্বতা অর্জন করুন। আপনার ইলমের পরিপক্বতা না হলে কেউ আপনাকে গ্রহণ করবে না।
বক্ষমাণ এই বইটিতে এ বিষয়গুলো নিয়েই আলোচনা হয়েছে। কীভাবে আপনি নিজেকে একজন যোগ্য আদর্শ নীতিবান ব্যক্তি হিসেবে গড়ে তুলবেন, আপনার জন্য কোন অঙ্গনটা কর্মক্ষেত্র হবে, আপনার প্রতিভার বিকাশ আপনি কীভাবে ফলাবেন তা নিয়েই মূলত এ পুস্তিকা।