ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ: নেত্রকোনা অঞ্চলের লোকছড়া, প্রবাদ-প্রবচন, লোকধাঁধাঁ ও শিলুক, বিয়ের গান, মেয়েলী গীত, জারি গান, বৃষ্টির গান, বারোমাসী গান, ঘাটু গান, আমতলার সঙযাত্রা, লোকমেলা, ঘুড়ি উৎসব, কীর্তন, ফসল কাটা-ফসল তোলা, ধান ভানার গান, বাউল-মুর্শিদী, দেহতত্ব, মারফতি, ভাটিয়ালী, পক্ষী শিকারের গান (কোড়া শিকার), পুথি পাঠ, হালকার গান, আঞ্চলিক গান, কবিগান, পল্লী গান, ফকিরালী জিকির গান, খেয়ালী ও রাখালী গান, পালা-গীতি, পাড়া-গায়ের ছড়া, দরবারী শিলুক, পালাগীতি অভিনয়, সাপের মন্ত্র, বারনী-আড়ং, ষাড়ের লড়াই, মুরগের লড়াই, চৈত্র সংক্রান্তিতে মশা-মাছি তাড়াবার আনুষ্ঠানিকতা, গিমাই শাক রান্না, মন্ত্রের বুলি আউরিয়ে শোলা দিয়ে দাদা-দাদী সম্পর্কীয়দের পেটানো, লোক-কাহিনি নির্ভর কিচ্চা, পালাগান, যাদু টোনা মন্ত্র, গাইনের গীত, হিরালী, পালকির গান এসব অধিকাংশেরই সামাজিক জীবনে যথেষ্ট জনপ্রিয়তা থাকলেও তা হারিয়ে যাচ্ছে। নেত্রকোনা থেকে সংগৃহীত ও সঙ্কলিত প্রবাদ-প্রবচন গুলোতে জীবন ঘনিষ্ট অসংখ্য বিষয় উঠে এসেছে । ব্যক্তি ও সমাজ জীবনের প্রথা, রীতি-নীতি, ধর্ম ও বিদ্রুপ থেকে শুরু করে সম্পর্ক, প্রেম ও স্নেহ মায়ার মতো মানবিক বিষয়গুলোও স্থান পেয়েছে। প্রতিটি প্রবাদ প্রবচনের অন্তরালে যেমন গল্প, কাহিনি ও বিবৃতি থাকে, তেমনি থাকে দু:খ-কষ্ঠ, হাসি-কান্না, হিংসা, বিদ্বেষ, তামাশা, দুর্ভোগ, সমস্যা, সমাধান, অভিজ্ঞতা, কৌতুক ইত্যাদি ভাবধারা। নেত্রকোনা অঞ্চলের লোকছড়ায় দেখা যায়, ছড়ার অবয়ব ও অনুষঙ্গে গ্রামীণ জীবন ও সমাজ জীবনের প্রাত্যহিক চিত্র স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। এবং ছড়াগুলোতে রয়েছে ক্রমপুঞ্জতা ও লোককথা। ছড়া বিভাজনের উপকরনে দেখা যায় পরিবার ও সমাজের নানা স্তরের নরনারীর জীবন। নেত্রকোনার লোকসংস্কৃতির যে নানাবিধ অনুষঙ্গ রয়েছে- তা এ গ্রন্থের এক মলাটের কলেবরে সংকুলান সম্ভব নয়। উক্ত গ্রন্থে লেখকের তিনটি মৌলিক প্রবন্ধের পাশাপাশি নেত্রকোনা অঞ্চলে প্রচলিত ৩৭৩ টি প্রবাদ-প্রবচন ও ২২৫ টি লোকছড়া গ্রন্থিত হয়েছে।