নাট্যকার রবিউল আলম তীক্ষ দৃষ্টি দিয়ে আমাদের সমাজজীবনকে অবলোকন করেন। সমাজ মুখ্য হলেও ব্যক্তি তাঁর চোখে গৌণ নয়। ব্যক্তির আশা-আকাক্সক্ষা ও জীবনসংগ্রামের বিষয়টা রবিউল আলমের নাট্যচর্চায় প্রতিফলিত। তাঁর সংলাপ জোরালো, চরিত্রাঙ্কন নিপুণ, কাহিনিবিন্যাস উল্লেখযোগ্য। একজন ধীমান ও পরিণত নাট্যকারের স্বর দেখা যায় তাঁর নাটকে। নাট্যসমগ্র তার পরিচয় বহন করে। রবিউল আলমের নাট্যসমগ্র ৩-এ ছয়টি নাটক স্থান পেয়েছে। নাটকগুলির রচনাকাল ২০০০-২০১০ সালের মধ্যে। নাপুস আবার এবং সবুজিয়া নব্বুই দশকে রচিত, তবে নাটক দুটি পুনর্লিখিত। গ্রন্থের সবকটিই পূর্ণাঙ্গ মৌলিক নাটক। চলনবিল নাটকের উপাখ্যান ও গান সংগৃহীত। পরিশিষ্টে তার বিস্তারিত বিবরণ আছে। চলনবিল এবং সবুজিয়া বাদে বাকি চারটি নাটকের সুর হাস্যরসাত্মক। নাটকগুলির প্রথম প্রযোজনার বিবরণ পরিশিষ্টে সংযোজিত।
রবিউল আলম
জন্ম বগুড়ায় (নভেম্বর, ১৯৪৬)। তবে কর্মস্থল চট্টগ্রামেÑপেশা ও নেশা উভয় ক্ষেত্রেই। তিনি চট্টগ্রামের তির্যক নাট্যগোষ্ঠী প্রতিষ্ঠার (১৯৭৪) মাধ্যমে গ্রুপ থিয়েটার আন্দোলনে সম্পৃক্ত হন। নাট্যক্ষেত্রে রবিউল আলমের পরিচয় নানামুখী হলেও তিনি মূলত নাট্যকার। মধ্যবিত্ত জীবনের আনন্দ-বেদনাকে খুব কাছে থেকে ধরতে সিদ্ধহস্ত তিনি। অনুবাদ করেছেন শেক্সপিয়র (অ্যাজ ইউ লাইক ইট), মলিয়ের (বিবি পাঠশালা), হ্যারল্ড পিন্টার (চারটি নাটক) ও ইয়াসমিনা রেজার (দাফনের পরের সংলাপ) নাটক। মিখাইল শ্চেদ্রিন, আবু রুশদ, মাহ্বুব-উল আলম ও সুচরিত চৌধুরীর গল্প অবলম্বনে নাটক লিখেছেন কয়েকটি। সত্তর দশকে সম্পাদনা করেছেন তির্যক নাট্যত্রৈমাসিক পত্রিকা। বেতার টেলিভিশনের নাট্যকার, অভিনেতা ও অতিথি প্রযোজক।