১৯৭৬ সালে ডেনমার্কের অখ্যাত একটা শহরে জন্ম নেন মর্টেন স্টর্ম। পারিবারিক পরিবেশ ছিল দুঃসহ, অকহতব্য। মারামারি, চুরি-ডাকাতি, গ্যাংফাইট, ড্রাগ, স্মাগলিং এসবের মধ্যে কাটে তার দুর্বিষহ কৈশোর, তারুণ্য। একদিন হাতে পান ইসলামের নবীর জীবনভিত্তিক একটি বই। বদলে যায় তার জীবন। গ্রহণ করেন ইসলাম। ইউরোপ থেকে চলে আসেন আরব দুনিয়ায়। জীবনাচার ও বিশ্বাসে হয়ে ওঠেন বিশুদ্ধ মুসলিম। কিন্তু ক্রমে জড়িয়ে পড়েন কট্টর ইসলামপন্থীদের সঙ্গে। কীভাবে? কেন? অনেক বছর আগে ছোট্ট ডেনিশ শহর কর্সোরের রাস্তায় মুসলিম বন্ধুদের সাহায্য করতে তিনি এগিয়ে যেতেন, যখন তাদের ওপর শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদীরা নিপীড়ন চালাত। আন্ডারডগের পক্ষে লড়াই করার এই অভীষ্ট লক্ষ্যেই তিনি চালিত হয়েছিলেন। মুজাহিদীনে যোগ দিতে আফগানিস্তানে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন, সোমালিয়ায় প্রকৃত ইসলামের বাতিঘর নির্মাণ
করতে চেয়েছিলেন।
একদিন 'সবকিছু ধুলোয় পরিণত’ হল- কেন? অভীষ্টের ব্যাপারে তার একনিষ্ঠতা কি সমস্ত অমীমাংসিত প্রশ্নের কণ্ঠ রোধ করে রেখেছিল? ইসলাম সম্পর্কে তার বোঝাপড়া ছিল কি ত্রুটিপূর্ণ? তার বিশ্বাস কি বিকৃত হয়েছিল আনোয়ার আল-আওলাকী, ওমর বাকরী মোহাম্মদ প্রমুখ তাত্ত্বিকদের দ্বারা? না কি তার ইসলাম গ্রহণ ছিল বিশ্বকে কষাঘাত করার একটা পন্থা মাত্র?
তার বিশ্বাসহানি ছিল ভীতিকর, আকস্মিক। জানতেন, ধর্মবিশ্বাস পরিত্যাগ করার সঙ্গে সঙ্গে ‘ভাইদের’ টার্গেটে পরিণত হবেন। তাদের সম্পর্কে, তাদের পরিকল্পনা সম্পর্কে অনেক কিছু জানেন। তাদের অধিকাংশ যোগ দিয়েছিল সন্ত্রাসবাদী গ্রুপে।
এই সময়টারই যেন অপেক্ষায় ছিল পশ্চিমা ইন্টেলিজেন্স- ডেনিশ পিইটি, ব্রিটিশ এমআই৫ ও এমআইড, মার্কিন সিআইএ। বিপুল পরিমাণ ডলার দিয়ে দলে ভিড়িয়ে নিল স্টর্মকে। মর্টেন কিংবা মুরাদ স্টর্ম হয়ে উঠলেন একজন ডবল এজেন্ট, একজন স্পাই।