'"মুসলিম উম্মাহর পতনে : বিশ্বের কী ক্ষতি হলো?" বইটি সম্পর্কে কিছু কথাঃ নিঃসন্দেহে এ গ্রন্থে মানবজীবনের উপর প্রভাব সৃষ্টিকারী সকল কার্যকারণ ও উপাদানের সুসংহত ও সুবিন্যস্ত সমাবেশ ঘটেছে এবং পূর্ণাঙ্গ দৃষ্টিকোণ থেকেই মুসলিম জাতি ও মানবজাতির ইতিহাস পর্যালােচনা করা হয়েছে এবং মুসলিম -উম্মাহকে এমন দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে যাতে পূর্ণ বাস্তবতাবােধ ও ভারসাম্য রক্ষিত হয়েছে। এসব কারণেই কিতাবটি ইতিহাস-গ্রন্থনার আদর্শ উদাহরণ হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। এ কিতাব আমাদের পথ দেখিয়েছে যে, একজন মুসলিম পশ্চিমা নীতি ও পদ্ধতি পরিহার করে কীভাবে ইতিহাসের গবেষণা ও গ্রন্থনায় অগ্রসর হবে, সেই পশ্চিমা নীতি ও পদ্ধতি যাতে সুসমন্বয়, সুবিচার ও গবেষণা-কৌলীন্য, সবকিছুরই মারাত্মক অভাব রয়েছে। আমার সৌভাগ্য যে, গ্রন্থ সম্পর্কে গ্রন্থকারের সঙ্গে একাত্ম হয়ে এবং অভিন্ন অনুভূতি পােষণ করে কিছু কথা বলতে পেরেছি এবং মনের এ প্রতিক্রিয়াগুলাে প্রকাশ করার সুযােগ পেয়েছি। আমি আরাে আনন্দিত যে, কিতাবটি আরবী ভাষায় অধ্যয়নের সুযােগ হয়েছে। কারণ বিজ্ঞ লেখক এর জন্য আরবী ভাষাকেই নির্বাচন করেছেন।'
সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী রহ.
আল্লাহর পথের এক মহান দাঈ, ইলমে ওহীর বাতিঘর। যুগশ্রেষ্ঠ মনীষী। খাঁটি আরব রক্তের গর্বিত বাহক। বিশ্বময় হেদায়াতের রােশনি বিকিরণকারী। উম্মতের রাহবার ও মুরব্বি। কল্যাণের পথে আহ্বানে চিরজাগ্রত কর্মবীর।
জন্ম ১৯১৪ ঈসাব্দে। ভারতের শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি ও আধ্যাত্মিকতার সূতিকাগার উত্তর প্রদেশের রাজধানী লাখনৌর রায়বেরেলীতে। প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়া আদ্যোপান্তই দারুল উলুম নদওয়াতুল ওলামায়। অধ্যাপনা জীবনের সিংহভাগও এই প্রতিষ্ঠানেই নিবেদিত ছিল। । আল্লামা নদভীর খ্যাতির সূচনা হয় বিংশ শতাব্দীর ত্রিশের দশকে; সীরাতে সাইয়েদ আহমাদ শহীদ রচনার মাধ্যমে। গ্রন্থটি গােটা ভারতবর্ষে তাঁকে পরিচিত করে তােলে। এরপর তিনি রচনা করেন মা যা খাসিরাল আলাম বিনহিতাতিল মুসলিমীন নামক কালজয়ী গ্রন্থ। যা তাকে প্রথমত আরববিশ্বে ও পরবর্তীতে বৈশ্বিক সুখ্যাতি এনে দেয়। এ পর্যন্ত গ্রন্থটির শত শত সংস্করণ বেরিয়েছে।
বিগত প্রায় পৌনে এক শতাব্দী ধরে তাঁর কলম অবিশ্রান্তভাবে লিখেছে মুসলিম ইতিহাসের গৌরবদীপ্ত অধ্যায়গুলোর ইতিবৃত্ত। সীরাত থেকে ইতিহাস, ইতিহাস থেকে দর্শন ও সাহিত্য পর্যন্ত সর্বত্রই তার অবাধ বিচরণ । উর্দ থেকে তার আরবী রচনাই যেন অধিকতর অনবদ্য। আল্লামা নদভী জীবনে যেমন পরিশ্রম করেছেন, তেমনই তার স্বীকৃতিও পেয়েছেন। আন্তর্জাতিক বহু ইসলামী প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার সদস্য ছিলেন। তিনি একাধারে রাবেতায়ে আলমে ইসলামী এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, লখনৌর বিখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুল উলুম নাদওয়াতুল-উলামা-এর রেকটর এবং ভারতীয় মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ প্লাটফরম মুসলিম পার্সোন্যাল ল বাের্ডের সভাপতি ছিলেন।
ইসলামের এই মহান সংস্কারক ১৯৯৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর জুমার আগে সুরা ইয়াসীন তিলাওয়াতরত অবস্থায় ইনতিকাল করেন। সাত খণ্ডে রচিত তারিখে দাওয়াত ও আযীমত তার। আরেকটি কালজয়ী রচনা যার অনবদ্য অনুবাদ সংগ্রামী সাধকদের ইতিহাস। বাংলাভাষী পাঠকদের হাতে বইটির সার্থক অনুবাদ তুলে। দিতে পেরে আমরা আল্লাহর শােকরিয়া আদায় করছি।
Title :
মুসলিম উম্মাহর পতনে : বিশ্বের কী ক্ষতি হলো?